সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ০৩:০৭

মার্কিন ভিসানীতির পরও বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি: তথ্যমন্ত্রী

মার্কিন ভিসানীতির পরও বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি চালুর পরও তাদের (বিএনপি) কোনো শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি। তারা আগের মতো জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি, নির্বাচন প্রতিহত-বর্জন করার রাজনীতি থেকে সরে আসতে পারছেন না। তাদের এ পথ থেকে সরে আসতেই হবে।’

বুধবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা ‘মানস’ আয়োজিত আলোচনা সভায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। পরে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিতে এটা স্পষ্ট করেছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি তাদের কোনো সমর্থন নেই। একটি সুষ্ঠু, অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, সেটিই তারা চান। যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দেবে বা নির্বাচন প্রতিহত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে এ ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে। এরপরও তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি।’

সরকারের সবসময় শুভবুদ্ধি আছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সবসময় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। আমরা চাই, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করুক। আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন হোক এবং তার মাধ্যমে দেশের জনগণ আগামীর সরকার নির্বাচিত করুক। সেটিই সরকার চায়, সেটিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান, সেটিই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও চায়।’

বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে বিচারিক আদালতে দেওয়া সাজা উচ্চ আদালতেও বহাল থাকা নিয়ে মির্জা ফখরুলের মন্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। আমান ও টুকু সাহেবের মামলা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা। এ মামলা আওয়ামী লীগ করেনি। সেই মামলায় তাদের শাস্তি হয়েছিল। তারা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন, হাইকোর্ট রায় বহাল রেখেছেন। আবার গয়েশ্বর বাবুসহ অনেকে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ একইসঙ্গে সেখানে পুলিশ ও জনতার ওপর হামলা করা সত্ত্বেও তারা যে আগাম জামিন পেয়েছেন, এতেই তো প্রমাণিত আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। এর চেয়ে বড় প্রমাণ তো দরকার নেই।

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন, রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন, এখন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার প্রতি যথেষ্ট সম্মান রেখেই বলতে চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সত্যতা পেয়েছে বিধায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কারণ শ্রমিক কর্মচারীদের যে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা সেটি না দিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা শ্রমিক কর্মচারীদের নেতাদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে ঘুস হিসাবে। সেজন্য মামলায় তার সঙ্গে নেতারাও আসামি হয়েছেন। এখানে দুর্নীতি হয়েছে, অনিয়ম হয়েছে সেটিই দুদক বলছে ও সেজন্য মামলা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আর তিনি রাজনৈতিক দল গঠন করার চেষ্টা করেছিলেন এবং বুঝতে পেরেছেন, যারা মানুষের কাছ থেকে যোজন-যোজন দূরে থাকেন, তাদের পক্ষে রাজনৈতিক দল করা সহজ নয়। রাজনীতি করতে হলে সাধারণ মানুষের কাতারে নামতে হয়, সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকতে হয়। নিজের পরিবারের চেয়েও সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব বেশি দিতে হয়। সেটি যারা করতে পারে না, তাদের পক্ষে রাজনৈতিক দল বা রাজনীতি করা সম্ভব নয়। তারা কেউ কেউ মন্ত্রী হতে পারেন কিন্তু রাজনীতিবিদ বা গণমানুষের নেতা হওয়া তাদের পক্ষে কখনো সম্ভব নয়।

এর আগে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য ‘উই নিড ফুড, নট টোব্যাকো’ অনুসারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিপাদ্য ‘তামাক নয় খাদ্য ফলান’ উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে তামাকের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আমি সারাজীবন একটিও সিগারেট বা তামাক গ্রহণ করিনি। পৃথিবীতে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ আছে। মাদক চাষের চেয়ে তাদের জন্য খাদ্য ফলানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মাদক চাষের জন্য ব্যবহৃত জমি যদি আমরা খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়বে। দেশ, জাতি, সমাজ, বিশ্বও উপকৃত হবে।’

‘মানস’ সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রধান নির্বাহী মোহম্মদ নূরুজ্জামান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়