সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৩, ০৯:০২

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ভুয়া: তথ্যমন্ত্রী

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ভুয়া: তথ্যমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আফগানিস্তানের নিচে দেখানো ফ্রান্সভিত্তিক সংস্থা রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের রিপোর্টকে ভুয়া ও বিদ্বেষপ্রসূত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এ রিপোর্টটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গাঁজাখুরি গল্প ছাড়া কিছু নয়। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আজকে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদাহরণ। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অনেক উন্নত দেশের চেয়েও বেশি।

শুক্রবার (৫ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপনশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের অর্জনে বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তাদের হতাশা এবং গাত্রদাহ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যাচারের অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তো দেশের জন্য গিয়েছেন। জাপান আমাদের ৩০ বিলিয়ন ইয়েন বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা করার চুক্তি করেছে। যে বিশ্বব্যাংক আমাদের পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংক ভুল বুঝে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ওয়াশিংটনে নিয়ে গেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তারা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করেছে। সে অর্জনগুলো বিএনপি মানুষের কাছে বিকৃতভাবে কেন মিথ্যাচার করছে সেটিই আমার প্রশ্ন? মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবদের অনুরোধ জানাবো, দেশের জন্য শেখ হাসিনা যেই সাহায্য সহযোগিতা এবং সম্মান বয়ে এনেছেন সেজন্য তারাও সম্মানিত বোধ করতে পারেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এগুলো দেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের গাত্রদাহ হচ্ছে, সেজন্য তিনি মিথ্যাচার করছেন।

এর আগে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রকে একটি ঐতিহাসিক বেতার কেন্দ্র উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা যেটি ওয়ারলেসের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছিল, সেটি এ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে পাঠ করে প্রথম শুনিয়েছিলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ সারাদিন এটি প্রচার করা হয়।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতারা যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন একজন সেনাবাহিনীর অফিসার দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি পাঠ করা প্রয়োজন। তখন প্রথম ইপিআরের অফিসার মেজর রফিক বীর উত্তমের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হয়েছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন আমি এমবুশ নিয়ে বসে আছি, আমি যদি এখান থেকে সরি, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষতি হতে পারে। পাকিস্তানিদের আক্রমণ করতে সুবিধা হবে। তাই আমি আমার এমবুশ অবস্থান থেকে সরতে চাইনি। তিনি জিয়াউর রহমানের খোঁজ দিয়েছিলেন।

ড. হাছান বলেন, মেজর রফিকের একটা বই আছে, বইয়ের শিরোনাম ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’। সেই বইয়ে সবিস্তারে বর্ণিত আছে। মেজর রফিক সেই বইয়ে লিখেছেন ২৫ মার্চ রাতে জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানিদের অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিলেন। পথে বাধা পেয়ে তিনি ফেরত আসেন। পরে ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। আজকে অনেক ইতিহাস বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করার লক্ষ্যে আমরা সমগ্র বিশ্বের আর্কাইভ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, আমি কিছুদিন আগে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম, আমাদের টিম ফ্রান্সেও গিয়েছিল, বিশ্বের বিভিন্ন আর্কাইভে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, সেগুলো সংরক্ষিত আছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বিশ্বের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ২৬ মার্চ এবং ২৭ মার্চ প্রচারিত হয়। এগুলো বিশ্বের বিভিন্ন আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে। আমরা সেগুলো সংগ্রহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিশ্বের অন্যতম সেরা আর্কাইভ ব্রিটিশপাতে, সেখান থেকে এরকম ১৫৬ টি ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।

যারা ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে, তারা জানে না বাংলাদেশে বিকৃতি ঘটালেও সারা বিশ্বে সত্য ইতিহাস সংরক্ষিত আছে। সেটা তো বিকৃত করা সম্ভবপর হয়নি। আমরা সেটিই সংগ্রহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। চিরদিনের জন্য এই বিতর্ক কেউ যেন আর উপস্থাপন করতে না পারে- বলেন তথ্যমন্ত্রী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়