প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০৪
কাউকে হাতে–পায়ে ধরে নির্বাচনে আনা সরকারের দায়িত্ব নয়: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কাউকে দাওয়াত করে, হাতে–পায়ে ধরে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের নয়। এটি সরকারি দলেরও দায়িত্ব নয়। কেউ নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনার জন্য গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি প্রস্তাব তোলেন। সে প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করছেন সংসদ সদস্যরা।
হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন আয়োজক কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে সরকারি দল একটি পক্ষ। সব বিরোধী দলও একটি পক্ষ। সেখানে নির্বাচনে আনা না–আনার, নির্বাচনে কেউ আসবে কি আসবে না, সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্র ও সংসদের পথ চলা নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য এবং সংসদীয় গণতন্ত্র সুসংহত করার জন্য কেউ নির্বাচনে আসুক কিংবা না–আসুক নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়, তখন সরকারের হাতে কোনো ক্ষমতা থাকে না। নির্বাচন কমিশনই নির্বাচন আয়োজন করবে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, সংসদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই সংসদের পথচলাকে ও সংসদীয় গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কয়েক দিন আগে বিএনপির সংসদ সদস্যরা যে পদত্যাগ করলেন, তাঁরা দেশের গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এই পদত্যাগ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংসদ বাতিল করা হয়েছিল, সামরিক তন্ত্র চালু করা হয়েছিল উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনের পর প্রকৃতপক্ষে ‘মার্শাল ডেমোক্রেসি’ চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে আ স ম আবদুর রবকে গৃহপালিত বিরোধী দল বানিয়ে সংসদকে হাস্যকর বানানো হয়েছিল। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল রশিদকে বিরোধী দলের নেতা বানিয়েছিলেন। ২০০৭ সালে সংসদ চত্বরে কারাগার ও আদালত বসানো হয়েছিল। যাঁরা এভাবে সংসদকে কলঙ্কিত ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছিলেন, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন কি না, তা ভেবে দেখা দরকার।
সংসদের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, নির্বাচনকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে হবে। কে করবে? বলা হয়েছে এটা সরকারের দায়িত্ব নয়। এটা আমিও বিশ্বাস করি—সরকারের দায়িত্ব নয়। সব দলকে নির্বাচনে আনা—সরকারের দায়িত্ব হতে পারে না। দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনকে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সেই আস্থা তৈরি করতে হবে। সেই আস্থা যদি তৈরি করার পরও যদি কোনো দল না আসে, তাহলে কিছু বলার নেই। কিন্তু সেই পরিবেশ আনার জন্য যে সহায়তা দরকার—সরকারকে নির্বাচন কমিশনকে তা দিতে হবে। সেটাই হচ্ছে সরকারের দায়িত্ব।