প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩, ০০:৩৫
বিএনপির ‘সহিংসতার’ বিরুদ্ধে ১৪ দলের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি
বিএনপি-জামায়াতের ‘সহিংসতা ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। বুধবার (২ আগস্ট) থেকে সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে জোটটি।
সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর বাসভবনে জোট নেতাদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে আমির হোসেন আমু বলেন, ১৪ দল বিগত দিনে যেভাবে সোচ্চার ছিল, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিল, ঠিক সেভাবে ২ আগস্ট থেকে মাঠে নামবে। প্রাথমিকভাবে সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করবো। এখন যেহেতু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন, তাই মঙ্গলবার সেই কর্মসূচি কর্তৃপক্ষের কাছে দেবো, অনুমতি নেওয়ার পর ঘোষণা করবো। ২ তারিখ থেকে কর্মসূচি পালন করবো।
সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রেখে নির্বাচন হতে হবে, ১৪ দলের মূল লক্ষ্য এটাই– এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য তাদের যত শর্ত থাকুন সেটা মেনে নিতে রাজি। আমরা ১৪ দল সম্মিলিতভাবেও প্রস্তুত। আমার মনে হয় আওয়ামী লীগও প্রস্তুত। কারণ, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বলেছেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা। বিদেশিরাও সেটা বলেছেন। সেটাই আমরা চাই। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংবিধানিক ধারাকে ব্যাহত করে সংবিধান পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না।
বিএনপির কর্মসূচির বিষয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, তাদের যে চিরাচরিত অভ্যাস সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার মাধ্যমে দেশের সাংবিধানিক ধারাকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, যাতে করে…। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চার নীতিকে হটানো, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবেশ ঘটানো এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ নস্যাৎ করা হয়েছিল, সেই একই ধারা আবার তারা প্রবর্তন করতে চায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধানে হাত দেওয়ার কথা তারা বারবার বলে আসছে। অর্থাৎ নির্বাচন ইস্যুটাকে সামনে রেখে তারা সাংবিধানিক ধারাকে বানচাল করে অন্য ধারার প্রবর্তন করার অর্থ হচ্ছে তারা মূল সংবিধানে হাত দিতে চায়। এতে ১৪ দল উদ্বেগ প্রকাশ করছে বলে জানান তিনি।
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সংলাপের প্রয়োজন আছে কিনা জানতে চাইলে আমু বলেন, ওরা তো আলোচনায় বিশ্বাস করে না। তারা তো উৎখাতের কথা বলে। তাই কীসের সংলাপ? যারা রাজনৈতিক ধারায় বিশ্বাস করে না তাদের সঙ্গে কী কারণে বসবো? সংবিধানের ধারা মতে দেশ পরিচালনায় আমরা প্রস্তুত।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, তারা বলেছে সরকার উৎখাত করা ছাড়া ঘরে ফিরবে না। যেখানে তারা এই কথা বলছে, সেখানে সংলাপ করার প্রশ্নই ওঠে না।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, যেকোনও সংলাপে মিনিমাম পয়েন্ট অব ফিউরিটি থাকে। একটা ঐক্যবদ্ধ জায়গার ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু তারা তো সেই জায়গায় নেই। তাই এখানে সংলাপের কোনও জায়গা নেই।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুক, জাতীয় পার্টি জেপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক রুবেল প্রমুখ।