প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩, ০১:৩০
গাজীপুর সিটি নির্বাচন: রুদ্ধশ্বাস ভোটগণনায় নগরমাতা জায়েদা
রুদ্ধশ্বাস ভোটগণনার পর অনানুষ্ঠানিকভাবে জয়ী ঘোষিত হলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের আজমত উল্লা খানকে ১৬২ ভোটে পরাজিত করেন তিনি।
অনানুষ্ঠানিকভাবে ভোটগণনায় ঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ২৩৮৯৩৪ ভোট পেয়েছেন। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২২২৭০৭ ভোট।
বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াও ব্যাপক ভোটার উপস্থিতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে জয়দেবপুরে বঙ্গতাজ মিলনায়তনে ফলাফল পরিবেশন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের কাছে জাহাঙ্গীর দাবি করেছিলেন, সব সেন্টারে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পেরেছেন যে তার মা জয়ী হতে চলেছেন।
সাবেক এই মেয়র বলেছিলেন, দিনে ভোট হয়েছে, দিনে রেজাল্ট নিয়ে যেতে চাই। আমি সব সেন্টারে খবর নিয়েছি, আমার মা জিতে গেছে। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে গেছিলাম, কেন সে দেরি করতেছে? তাড়াতাড়ি যেন রেজাল্টটা (ফলাফল) দিয়ে দেয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। শান্তিপূর্ণ এই ভোটের এখন আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা চলছে। এ নির্বাচনে মোট আটজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের জায়েদা খাতুনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের সামনে মা জায়েদা খাতুনের ভোটের ফলাফলের অপেক্ষায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: ভোরের কাগজ এর আগে সকাল আটটায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ একটানা চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় করেন ভোটাররা। নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ছিলো না প্রার্থীদের। সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে ছিলো ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবে দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কমে যায়।
নগরে এই প্রথম ইভিএমে ভোট হয়। এই প্রযুক্তির সঙ্গে অনেক ভোটারই অপরিচিত। যে কারণে অনেক কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণে ছিল ধীরগতি। বিশেষ করে নারী ও বয়স্করা কিছুটা জটিলতায় পড়েন। তবে তরুণরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ভোট দিয়েছেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ভলো। প্রার্থীদেরও কোনো অভিযোগ নেই। কেন্দ্রে আসা কোনো ভোটার ভোট না দিয়ে ফেরত যাননি।
ভোট সুষ্ঠু করতে সবকটি কেন্দ্রেই স্থাপন করা হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। মোট চার হাজার ৪৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন। ইসি মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশ।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৩১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৫ জন প্রার্থী রয়েছেন।
সকালে ৫৭ নং ওয়ার্ডের দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন আজমত উল্লা খান। ভোট দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে এসেছে। অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হচ্ছে। জনগণের পাশে ছিলাম। জনগণ আমাকে ভালোবাসে। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। ফলাফল যাই হোক আমি মেনে নেবো।
ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী জায়েদা খাতুন। এ সময় তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ ভালো। ভোট সুষ্ঠু হলে ফলাফল যাই হোক তা মেনে নেবেন।