প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৩, ২২:৩৩
প্রধানমন্ত্রীর সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকারের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে স্পষ্ট যে অঙ্গীকার করেছেন তার প্রশংসা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পথ উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রশংসাও করেছে দেশটি।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে নবম বাংলাদেশ-মার্কিন অংশীদারত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংলাপে পারস্পরিক স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাম্বাসেডর ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
সংলাপে পররাষ্ট্র সচিব মোমেন তার মার্কিন সমকক্ষকে স্থানীয় ও জাতীয় উভয় পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে নির্বাচন কমিশনের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন। এছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মানবাধিকার কর্মকাণ্ডের কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি শেয়ার করেন।
জবাবে মার্কিন পক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট অঙ্গীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পথ উন্মুক্ত করার প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্বের ৫০ বছরপূর্তি উৎসব উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর জাপান এবং ওয়াশিংটন সফর সম্পর্কে মার্কিন পক্ষকে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের সম্প্রতি প্রকাশিত ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গির রূপরেখাও শেয়ার করেছেন।
অন্যদিকে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যাম্বাসেডর নুল্যান্ড নিজ নিজ ইন্দো-প্যাসিফিক নথিতে দুই দেশের মধ্যে অভিন্নতার ক্ষেত্র উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রদূত নুল্যান্ড বাংলাদেশ সরকারের চলতি বছরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করার ঘোষণার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বর্ধিত বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য শ্রম খাতের সংস্কারের সঙ্গে অব্যাহত অগ্রগতির গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
উভয়পক্ষই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে ক্রমবর্ধমান এবং প্রাণবন্ত ব্যবসায়িক সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের ব্যবসায়িক ব্যস্ততা বাড়াতে সাইবার নিরাপত্তা এবং ডাটা সুরক্ষার বিষয়ে আরও কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত নুল্যান্ড মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তায় বাংলাদেশের অসাধারণ উদারতার প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত মানবিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মোমেন তাকে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিলের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং সীমিত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন পাইলট প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করেন। উভয়পক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ কিছু রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন কার্যক্রমকে আরও বাড়াতে সম্মত হয়েছে।
উভয়পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের মতামত বিনিময় এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ আগামী বছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় অংশীদারত্ব সংলাপের দশম রাউন্ডে আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, হোয়াইট হাউজ এবং ইউএসএআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।