প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৩২
অন্যের আনন্দ নিশ্চিতেই পুলিশের ঈদ
মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে। যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দের মাঝে বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায় ঈদ উদযাপন করেছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন মুসল্লিরা। একে অন্যের সঙ্গে করেছেন কোলাকুলি।
তবে পেশাগত কারণে মানুষের নিরাপত্তাকেই গুরুত্ব দিয়ে ঈদের দিন কেটে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। মানুষের আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে তারা কাজ করছেন ঈদের দিনেও। নগরবাসীর আনন্দে নিশ্চয়তা দেওয়ায় যেন তাদের আনন্দ।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে কথা হয় ক্যান্টনমেন্ট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার খন্দকার রেজাউল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সবাই বাবা-মা, ভাই-বোন নিয়ে ঈদ উদযাপন করছে। আমরা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। আজকে ঈদের দিন, মা-বাবা, স্ত্রী-বাচ্চাদের বাসায় রেখে ভোর পাঁচটায় এসেছি। আমরা তখন থেকেই নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। এটা একটা প্রশান্তি যে এতগুলো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি। তারা নামাজ পড়ে নিরাপদে ঘরে যাচ্ছেন, সেটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া।
তিনি বলেন, পরিবারের মানুষ মন খারাপ করে। বাচ্চারা এখন বুঝে নেয়। তারা সকালে উঠে দেখে আব্বু নেই। আমাকে ফোনও করেছে আব্বু তুমি কোথায়। এভাবেই আসলে ঈদটা কাটে আমাদের।
পল্টন থানার এএসআই জহিরুল বলেন, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি এবং এখানে কোনো আইনশৃঙ্খলার অবনতি নেই। সুন্দরভাবে নামাজের পরিবেশটা আমরা সৃষ্টি করতে পেরেছি। আমরা এদিক দিয়ে সফল। আমাদের ফ্যামিলি আছে। কিন্তু ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজ পড়তে আসছেন, তাদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে আমরাও যারা সুযোগ পেয়েছি নামাজ পড়েছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি, সার্বিকভাবে দায়িত্বটা পালন করতে পেরেছি। মানুষের ঈদের আনন্দ নিশ্চিত করাটাই আমাদের কাছে ঈদ।
তিনি বলেন, পরিবারের মানুষ এখন আর মন খারাপ করে না। তারা জানে যে আমরা দায়িত্ব পালন করছি। কেউ ছুটি পেয়েছে, কেউ পায়নি। তাতে আমরা অসন্তুষ্ট না। আমাদের এটা নিয়ে দুঃখ নেই।
ঈদ জামাত শেষে মানুষকে নিরাপদে বের হতে সহায়তা করছিলেন ধানমন্ডি থানার এএসআই আবুল কালাম আজাদ। পরিবার ছাড়া ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই একটু খারাপ লাগার বিষয়। সবাই ঈদে বাড়িতে যায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে। আমরা যেতে পারি না, সেজন্য তো খারাপ লাগেই। তবে এই খারাপ লাগাকেই ভালো লাগায় পরিণত করি। সবাই নামাজ পড়ে যাচ্ছে, আমরা ডিউটি করছি। সবার আনন্দটাই নিজের আনন্দ মনে করে ঈদ পার করি। পরিবারের মানুষ মন খারাপ করলেও বুঝিয়ে বলি। তারাও এখন বোঝে। এই ঈদে একসঙ্গে না পারলেও পরেরবার একসঙ্গে ঈদ করতে পারবো। মানুষ আনন্দ করে, সেটা দেখেই আমরা আনন্দ পাই।