প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ২২:৫২
জনজীবনে অস্বস্তি, ঢাকায় তীব্র তাপদাহ
ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি কমেছে। তবুও তীব্র তাপদাহে জনজীবনে অস্বস্তি। অন্যদিকে, গত কিছুদিন ধরে টানা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকা চুয়াডাঙ্গায় আজও তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে, চুয়াডাঙ্গাকে টপকে সোমবার (১৭ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধরে রেখেছে পাবনার ঈশ্বরদী।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আপাতত বড় পরিসরে ঝড়-বৃষ্টি না হলেও তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। এতে তাপপ্রবাহের আওতাও কমবে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরমের অনুভূতি বাড়বে। যা অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করবে।
সোমবার ঈশ্বরদীকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় রোববার (১৬ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপামাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও সোমবার তা কমে হয়েছে ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার তীব্র তাপপ্রবাহের আওতা কিছুটা কমেছে। একই সঙ্গে দেশের পূর্বাংশে বিচ্ছিন্নভাবে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘এতদিন তাপমাত্রা বেশি থাকলেও অস্বস্তি কিন্তু সেভাবে ছিল না। অস্বস্তি নির্ভর করে দুটি জিনিসের ওপর, তাপমাত্রা একদিকে বাড়ছে, এর সঙ্গে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কী, সেটার একটা সম্পর্ক আছে। এটাকে বলা হয় কমফোর্টে ইনডেক্স। গত ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশের আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বায়ু প্রবাহ ছিল না। সেজন্য জলীয় বাষ্পের পরিমাণ খুব কমছিল। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৪০ শতাংশের নিচে ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকলে পারদে তাপমাত্রা ওপরে উঠলেও অস্বস্তি হয় না। গরম অনুভূত হয় তবে শরীর ঘামে না। কিন্তু গত ১৪ এপ্রিলের পর পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে বাংলাদেশে মেঘমালা আসতে শুরু করেছে। জলীয় বাষ্প বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আগামী ১৯ তারিখ থেকে আমরা তাপমাত্রা যাই রেকর্ড করি না কেন, অস্বস্তিবোধ বাড়বে।’
আবুল কালাম মল্লিক আরও বলেন, ‘সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়বে। কিন্তু অস্বস্তিবোধ বেশি থাকবে।’
আবহাওয়াবিদরা আরও জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই। তবে গাণিতিক পূর্বাভাস মডেলগুলো আগামী সপ্তাহে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও মডেলগুলোর বিষয়ে আমাদের যে অতীত অভিজ্ঞতা তাতে বলতে পারি, সেই পূর্বাভাসের বিষয়ে নিশ্চিত করতে আরও কিছু সময় দরকার। যে বৃষ্টিটা মডেলগুলো দেখাচ্ছে তা নির্ভুলভাবে উপস্থাপনে এ সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রাজশাহী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।