প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:৪৪
১৯৬৫ সালের পর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়েছে। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে এ তাপমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১৯৬৫ সালের পর এটি ঢাকার সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। এর আগে ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
চরম গরমে শনিবারও (১৫ এপ্রিল) হাঁসফাঁস করছেন নগরবাসী। ঢাকায় সহসা ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান বলেন, আজ ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালে বড় রেঞ্জে তাপপ্রবাহ হয়েছিল। তখন ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সেটা অতিক্রম করলো।
তিনি বলেন, এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। ১৯৬৫ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। সেই হিসাবে বলা যায় ১৯৬৫ সালের পর এটাই (৪০ দশমিক ৪) সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা।
গত কিছুদিন ধরেই তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। ৪ এপ্রিল দেশের ছয় জেলায় শুরু হয় মৃদু তাপপ্রবাহ। এরপর ঝড়-বৃষ্টিহীনতায় ক্রমেই তাপপ্রবাহের তীব্রতা বাড়ে, বিস্তৃত হতে থাকে আওতা। সর্বশেষ শুক্রবার তীব্র থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
টানা তাপাদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষ তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে। হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। গরমে অনেকের নির্ঘুম রাত কাটছে। বাইরে বের হওয়া দায়, যেন মরুভূমির গরম। প্রচণ্ড রোদের তাপে কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলে যাওয়ার খবর এসেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গায় শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা একদিন আগে ছিল ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে আগামী তিনদিনের মধ্যে দিনের তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। আবহাওয়াবিদ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট বিভাগ) ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। আগামী ১৬ এপ্রিলের পর থেকে সীমিত পরিসরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে হালকা বৃষ্টি শুরু হতে পারে। মূলত ২৩ এপ্রিলের পর থেকে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। এতে তাপপ্রবাহ দূর হতে থাকবে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রিকে মৃদু, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রিকে মাঝারি ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়।
আগামী পাঁচদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।