বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৬ °সে

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:১১

৩০০ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৬০ দিন দুধ পান করাবে সরকার

৩০০ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৬০ দিন দুধ পান করাবে সরকার
অনলাইন ডেস্ক

উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের দুধ পানের পরিমাণ অনেক কম। উন্নত বিশ্বে মাথাপিছু দৈনিক দুধ পানের পরিমাণ গড়ে এক লিটারের কাছাকাছি হলেও বাংলাদেশে তা মাত্র ১৭৬ মিলিলিটার। শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে দুধের গুরুত্ব বিবেচনা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (এলডিডিপি)।

দুধ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাতকরণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য দুধের বাজারজাতকরণ এবং দুধ পানের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো।

এ লক্ষ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপদ ও পুষ্টিকর দুগ্ধজাত পণ্য প্রদর্শনীর বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেশের ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাইলট প্রকল্প আকারে এটি চালু করা হবে। এ কর্মসূচির আওতায় ৩০০টি নির্বাচিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তরল দুধ পান করানো হবে।

দুধে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং পানি। শরীর গঠনে বিশেষ করে দাঁত ও অস্থিকে করে শক্তিশালী, মানসিক স্বাস্থ্য এবং মেধা বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখে দুধ। মেধা ও স্বাস্থ্যসম্পন্ন জাতি গঠনে এর অবদান অপরিসীম। তাই বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে নিরাপদ দুগ্ধজাত পণ্য প্রদশর্নী ও ভোক্তা সচেতনতা বাড়াতে প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ কার্যক্রমে অংশ নিতে আগ্রহী বেসরকারি উদোক্তাদের এতে সম্পৃক্ত করা হবে। প্রকল্প থেকে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের অভ্যাস সৃষ্টি হবে, যা পণ্যের চাহিদা বাড়াতে ও সরবরাহ কাঠামোতে একটি উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিরাপদ এবং পুষ্টিকর দুগ্ধজাত পণ্য বিশেষ করে তরল দুধ স্কুলশিক্ষার্থীদের পান করাতে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। স্কুল মিল্ক ফিডিং প্রোগ্রাম- এসএমএফডি নামের পাইলট প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে এরই মধ্যে গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এই গাইডলাইনে স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে দুধ বিতরণে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা, দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্ণনা করা হয়েছে।

বিশেষ করে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা, শিক্ষার্থীদের মাতা-পিতা ও অভিভাবকদের দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। পাশাপাশি দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাহকারীসহ উপজেলা পর্যায়ে স্কুল মিল্ক ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটি এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে স্কুল মিল্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির দায়িত্বও বর্ণনা করা হয়েছে এ গাইডলাইনে। এছাড়া রয়েছে দুধের পুষ্টিসহ মান নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশের সম্ভাব্য প্রতিকূল প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা। গাইডলাইনটি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এবং স্থানীয়ভাবে সমন্বয়ে সহায়ক হবে।

কর্মসূচির রূপরেখা

কেন্দ্রীয় স্কুল মিল্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটি কর্তৃক দেশের দারিদ্র্য মানচিত্র অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ৫০টি ও পরে পর্যায়ক্রমে ২৫০টি স্কুলসহ মোট ৩০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রম নেওয়া হবে। দেশের দরিদ্র এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এ সুবিধা ভোগ করবে। সেসব এলাকার শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে এবং খর্বকায় ও ক্ষীণ বৃদ্ধিসম্পন্ন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা সুবিধাভোগী হবে।

প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (পিএমইউ) কর্তৃক নির্বাচিত দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল, ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস-আড়ং ডেইরি, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ-ফার্ম ফ্রেশ, রংপুর ডেইরি লিমিটেড-আরডি মিল্ক ও মিল্ক ভিটা। এই কর্মসূচির আওতায় বছরে মোট ১৬০ দিন শিক্ষার্থীদের দুধ পান করানো হবে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫০টি স্কুলে, জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫০টি স্কুলে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। এভাবে ২০২৫ সালের মধ্যে মোট ৩০০টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দুধ পান করানো হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়