প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩:২৭
পুলিশকে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে
সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পুলিশকে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে জনগণ অবৈধ অস্ত্রধারী ও বিভিন্ন তথাকথিত বাহিনী এবং দুষ্কৃতিকারীদের অত্যাচারে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারতো না। সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
রোববার (৮ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ এর শেষ দিনে বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতেই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ও ১৫ আগস্টে সপরিবারে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান চার নেতাকে স্মরণ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, আপনারা সেই বীর পুলিশ সদস্যের উত্তরসূরী। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামাজিক ও জননিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় অন্যান্য জাতীয় দায়িত্ব পালনে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, দুষ্কৃতিকারী ও আইন ভঙ্গকারীদের দমনে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং জীবন উৎসর্গকে এদেশের মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
তিনি বলেন, আমাদের আজকের এই গতিশীল অবস্থানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। মহান মুক্তিযুদ্ধে সূচনালগ্নে দেশ ও মাতৃকা রক্ষার্থে বিজয় কেতন ওড়ানোর সুদৃঢ় প্রত্যয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র। বীরদর্পে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। পাশাপাশি সুনিপুণ রণকৌশল প্রণয়ন ও অস্ত্র সরবরাহ, সাধারণ জনগণকে প্রশিক্ষণ প্রদান ও জনমত গঠন করেন পুলিশ সদস্যরা। এভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশ পুলিশ এ দেশের ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল নক্ষত্রপুঞ্জের মতো বিচরণ করছে।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আরও বলেন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে যে কোনো সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হিসেবে প্রত্যয় ও আস্থার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সাম্প্রতিক অতিমারি আমাদের সামষ্টিক সামাজিক জীবনে দুর্বৃত্ত আকার ধারণ করেছে। যখন আপনজনের মরদেহ থেকে নিজ পরিবারের সদস্যরা দূরে ছিল তখন আপনারা আপনাদের জীবনের পরোয়া না করে জনমানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছিলেন। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্যদ্রব্য। নিশ্চিত করেছেন ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা। আত্মনিয়োগ করেছেন করোনায় নিহত মানুষের সৎকারে। আপনাদের এ আত্মত্যাগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সুদৃঢ়করণের অংশ হিসেবে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ বিচার বিভাগ ও বাংলাদেশ পুলিশ পারস্পরিক সহযোগিতার আদলে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা বিচার প্রক্রিয়ায় আদালতের বিভিন্ন নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অপরিসীম সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এ সময় পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।