প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৫৫
ইতালিতে ১১ দিনে সাত বাংলাদেশির মৃত্যু
ইতালিতে গত এগারো দিনে সাত বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। স্ট্রোক, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে এসব বাংলাদেশি মারা যান। গত ২৬ নভেম্বর মো. সাইফুল ইসলাম রোমের সিভিতা ভেক্কিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তার দেশের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ।
৫ ডিসেম্বর রেদুয়ানুর রহমানকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার দেশের বাড়ি ঢাকা। পুলিশ মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন। একই দিনে কাতানিয়া সিসিলিতে মো. শাহ আলম নামক এক যুবক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরপারে চলে যান।
এরপর ৬ ডিসেম্বর মো. বারেক সারেং নামক আরেক বাংলাদেশি হার্ট-অ্যাটাকে দক্ষিণ ইতালির নাপোলির হাসপাতালে মারা যান। তার দেশের বাড়ি শরীয়তপুর। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার মো. ফয়সাল খান (৩৩) হার্ট অ্যাটাকে রোমে মৃত্যুবরণ করেন।
ইমরান দরবারি নামে আরেক বাংলাদেশি দেশটির আনকোনা শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। পিতা লুৎফর দরবারী। এছাড়া আরেক রেমিট্যান্সযোদ্ধা মো. আজিম চলতি মাসের ৭ তারিখ ইতালির একটি হাসপাতালে মারা যান। বাবা মরহুম মতি ভেন্ডার। খেপুপাড়া সবুজবাগ কলেজ রোড, ঢাকা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মৃতদের অনেকের ব্যক্তিগত তথ্য পরিচয় পাওয়া যায়নি। গেলো ও চলতি মাসের কয়েক দিনের ব্যবধানে মোট সাত বাংলাদেশি ইতালিতে মারা যায়। অনেক প্রবাসী এ মৃত্যুর কারণে ভয় আশঙ্কায় ভুগছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশার কথা ব্যক্ত করে অনেককে দুঃখ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, মৃতদের বেশির ভাগের বয়স ৩০ থেকে চল্লিশ বছরের মধ্যে হবে। তাদের অকাল মৃত্যুতে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
হার্ট অ্যাটাক বিষয়ে লেখক ও চিকিৎসক ফারহানা মোবিন কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দেহে হৃদপিন্ড পায়ের আঙ্গুল থেকে মাথা পর্যন্ত রক্ত পৌঁছে দেয়। পানির পাইপ লাইনে ময়লা জমলে, পানি সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না। ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের শিরা উপ-শিরাতে ময়লা জমলে, রক্ত সঠিকভাবে চলতে পারে না। রক্তের ময়লা হলো চর্বি।
‘রক্তনালিতে জমে থাকা চর্বি তৈরি হয় দেহের তুলনায় বেশি পরিমাণে, চর্বি জাতীয় খাবার অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা, পরিশ্রম, মাদক দ্রব্য, ধূমপান থেকে। এছাড়া বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে, হৃদপিণ্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। তখন হার্ট সারাদেহে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহ করতে পারে না। পরিণামে তৈরি হয় হৃদপিণ্ডের নানাবিধ অসুখ।’
তিনি বলেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অক্লান্ত পরিশ্রমে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি ভয়ানক দুশ্চিন্তা থেকে হৃদ স্পন্দন বেড়ে হার্টের অসুখ হতে পারে। এছাড়াও আরও অনেক কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তিনি এসব বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক থেকে ভালো থাকতে কয়েকটি পরামর্শ দেন।
যেসব কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে
১) বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ২) অতিরিক্ত মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার, মাদক দ্রব্য, ধূমপান পরিহার করতে হবে। ৩) ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ৪) জীবন মানেই একটার পর একটা যুদ্ধ। মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত নিজেকে খুশী রাখা উচিত। ৫) ধর্মের কাজ, মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি দেয়। হার্ট ভালো রাখার জন্য মানসিক প্রশান্তি ভীষণ জরুরি।