প্রকাশ : ১২ মে ২০২২, ১২:৩৫
আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ
আজ আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। আধুনিক নার্সিং পেশার রূপকার ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ১২ মে দিবসটি উদযাপন করা হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে।
এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় শক্তিশালী নার্স নেতৃত্বের বিকল্প নেই, বিশ্ব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নার্সিং খাতে বিনিয়োগ বাড়ান ও নার্সদের অধিকার সংরক্ষণ করুন।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করবে। সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটস এবং নার্সদের অন্যান্য সংগঠন শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় মহাখালীতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অডিটরিয়ামে আলোচনাসভা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
সঠিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ১ জন চিকিৎসকের জন্য ৩ জন নার্স এবং হাসপাতালের ৫ রোগী ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রত্যেক শয্যা বা রোগীর জন্য ১ জন করে নার্স থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এই চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো।
সরকারি তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট নার্সের সংখ্যা ৭৬ হাজার ৫১৭ জন। এর বিপরীতে চিকিৎসকের সংখ্যা ১ লাখ ২ হাজার ৯৯৭ জন। সে হিসেবে ১ জন চিকিৎসকের জন্য তিনজনের জায়গায় নার্স রয়েছেন একজনেরও কম, অর্থাৎ চিকিৎসক ও নার্সের অনুপাত ১:০.৭৪। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, দিন দিন নার্সিং পেশার উন্নয়ন হচ্ছে। তবে এখনো কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংকট রয়েছে। যেমন উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দরকার। বিশেষ করে সঠিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্বাস্থ্য খাতে জনবল ও রোগীর তুলনায় নার্স ঘাটতি অনেক বেশি।
এই ঘাটতি পূরণে নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সিট সংখ্যা বাড়াতে হবে, নার্সদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে। চাকরিতে নার্সদের জন্য পদ বাড়াতে হবে। পদ সৃজন করতে হবে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আগে নার্সরা অতটা মর্যাদা পেতেন না। এখন পাচ্ছেন। আগের থেকে অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। নার্সিং পেশাটা ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই সরকারের আমলে অনেক উন্নতি হয়েছে।
অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সদের দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীত করায় এই পেশার প্রতি ছেলে-মেয়েদের আগ্রহ আগের চেয়ে বেড়েছে বলে জানান সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটস (এসএনএসআর) এর সাধারণ সম্পাদক সাব্বির মাহমুদ তিহান। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, আগে নার্সরা ছিলেন তৃতীয় শ্রেণির গ্রেডে, এই সরকার ২০১১ সালে সেটা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করেছে। এর ফলে এখন ছেলে-মেয়েদের এই পেশায় আগ্রহ বেড়েছে। ২০১৫ সাল থেকে নার্সিং বিভাগে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। শুরুর দিকে সারা দেশে ৩০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলের। এ বছর সেটা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজারে। মানুষের চোখেও নার্সদের মর্যাদা বেড়েছে। সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাও বেড়েছে। এখন মানুষ নার্স পেশাকে অনেক শ্রদ্ধা করেন। আশা করি এটা দিন দিন আরও বাড়বে। তবে এখনো বাংলাদেশের নার্স সেক্টরের নড়বড়ে অবস্থা।
সূত্র: দেশ রূপান্তর