প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ২৩:১১
বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ৮০ লাখ গ্রাহক
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সারাদেশের প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে ৭০ শতাংশের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে এবং বুধবার দুপুরের মধ্যে সম্পূর্ণ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে কত গ্রাহক এখন বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রায় ৪ কোটি ৮০ লাখের মতো গ্রাহক। এখন প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। আরইবি'র (পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) আট শতাধিক পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পিডিবিসহ সবমিলিয়ে প্রায় দেড়-দুই হাজার পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি আজ বিকেলের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারবো। ট্রান্সমিশনে আমাদের খুব বড় রকমের আঘাত হয়নি। বড় ধরনের আঘাত হয়েছে ডিস্ট্রিবিউশনের ক্ষেত্রে। সেখানে তার ছিঁড়ে গেছে। গাছ উপড়ে গিয়ে লাইনের ক্ষতি করেছে। অনেক জায়গায় পোল (বিদ্যুতের খুঁটি) পড়ে গেছে, ভেঙে গেছে। অনেক জায়গায় সমস্যা দেখা গেছে।
নসরুল হামিদ আরও বলেন, তার ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে কিছু এলাকায় আমরা বিদ্যুৎ সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছি। দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে, সম্পূর্ণভাবে রিস্টোর (পুনঃস্থাপন) না করা পর্যন্ত আমরা বিদ্যুৎ চালু করবো না।
সম্পূর্ণ সমাধান হতে কতদিন লাগবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা আগামীকাল দুপুরের মধ্যে শতভাগ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবো বলে আশা করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন, বিশেষ করে আরইডি ঝড় শুরু হওয়ার পর থেকেই সজাগ ছিল। এখন ২৪ ঘণ্টা তারা কাজে নিয়োজিত আছেন, বিশেষ করে আরইডি ও পিডিবি। ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কী পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টাকার অঙ্ক এই মুহূর্তে আমাদের কাছে আছে। সে বিষয়টি এখন বলতে চাই না। বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সাবস্টেশনগুলোতে পানি উঠে গেছে।
লোডশেডিং নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে নসরুল হামিদ বলেন, এখন লোডের পরিমাণ কম। সুতরাং লোডশেডিংয়ের এখন সু্যোগ নেই। আমরা আশা করছি যে এখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসার। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম কত দ্রুত লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসতে পারি সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবো।
দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহার না করার বিষয়ে যে কথা আসছে, তাতে মানুষের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে তার উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে কথাটা আসছে শঙ্কার ভিত্তিতে। যদি দেশের অবস্থা, সারাবিশ্বের অবস্থা খুব খারাপের দিকে যায় সেক্ষেত্রে তাদের কথা মনে হয়। তবে আমি মনে করি এত শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা চেষ্টায় আছি ভালো অবস্থায় যাবো। আমাদের সব পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সামনে এগোতে হবে। এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমি মনে করি আমরা এটা সামাল দিতে পারবো।