শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৩০

বিকল্প উৎস খুঁজছেন চালের বৈশ্বিক ক্রেতারা

বিকল্প উৎস খুঁজছেন চালের বৈশ্বিক ক্রেতারা
অনলাইন ডেস্ক

বিশ্ববাজারে চালের সরবরাহ নিয়ে চরম সংকট তৈরি হয়েছে। মূলত বিশ্বের অন্যতম প্রধান চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ভাঙা চাল রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি দেশটি চালের রপ্তানি শুল্ক ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করায় বৈশ্বিক ক্রেতারা বিকল্প উৎস থেকে চাল আমদানিতে ঝুঁকছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত নন-বাসমতি চালে ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। অতিরিক্ত ব্যয় ও লোকসানের আশঙ্কায় তারা এ শুল্ক প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতির সুযোগে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামসহ অন্য চাল রপ্তানিকারক দেশগুলো চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও ভারতের বিকল্প হিসেবে এসব দেশকে বেছে নিচ্ছেন আমদানিকারকরা।

গত সপ্তাহে ভারত ভাঙা চাল রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি নন-বাসমতি চালের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হয়। স্থানীয় বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, অপর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে ভারতে ধান আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে উৎপাদন ব্যাপক কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ধারণা ঠিক হলে দেশে উৎপাদিত চালের মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাবে ভারত। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে দেশটি ভাঙা চাল বন্ধ ঘোষণা করেছে। আর নন-বাসমতি চাল রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে আরোপ করা হয়েছে অতিমাত্রায় রপ্তানি শুল্ক। এতে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে দাবি সরকার সংশ্লিষ্টদের।

রপ্তানি নীতিতে পরিবর্তন আনার পর পরই ভারতের বন্দরগুলোয় চাল লোডিং বন্ধ হয়ে যায়। আটকা পড়ে ১০ লাখ টনেরও বেশি চাল। ক্রেতারা নতুন করে আরোপিত শুল্ক পরিশোধে অস্বীকৃতি জানান। এদিকে সরকারের নতুন এসব সিদ্ধান্তের পর ভারতের ব্যবসায়ীরা চলতি সপ্তাহের এখন পর্যন্ত চাল রপ্তানিতে নতুন কোনো চুক্তি করেনি। একটি গ্লোবাল ট্রেডিং ফার্মের মুম্বাইভিত্তিক এক ডিলার বলেন, চাল রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার কারণে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে বিশ্ববাজার। ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির অধীনে চাল রপ্তানি করার বিকল্প উপায় খুঁজছেন।

চলতি সপ্তাহে ভারতের ৫ শতাংশ ভাঙা সিদ্ধ চালের দাম দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৩৮৫-৩৯২ ডলারে। গত সপ্তাহে যা ছিল ৩৭৯-৩৮৭ ডলার। চলতি বছর দেশটির চাল রপ্তানি এক-চতুর্থাংশ কমে যেতে পারে। কারণ ক্রেতারা এরই মধ্যে তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে অন্যান্য উৎস থেকে চাল আমদানিতে ঝুঁকছেন।

তথ্য বলছে, চলতি সপ্তাহে ভিয়েতনামের ৫ শতাংশ ভাঙা চাল বেচাকেনা হচ্ছে ৪০০-৪১০ ডলারে। এর আগের সপ্তাহে দাম ছিল ৩৯০-৩৯৩ ডলার।

এদিকে থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম বেড়ে টনপ্রতি ৪২৫-৪৩৫ ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত সপ্তাহে দাম ছিল ৪১৬-৩২০ ডলার। ব্যাংককভিত্তিক ব্যবসায়ীরা বলছেন- ভারি বৃষ্টিপাত, বন্যা ও পরিবহন সমস্যার কারণে চাল সরবরাহের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে। তবে ভারতের রপ্তানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ায় অনেক গ্রাহক দেশের এখনো থাইল্যান্ড থেকে আমদানি বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়