প্রকাশ : ০৯ মে ২০২২, ১০:০৩
‘অশনি’ এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়, এগোচ্ছে উপকূলের দিকে
সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনি আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি এখন উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে যে গতিপথে আছে তাতে আগামীকাল মঙ্গলবার এটি ভারতের উপকূলের আছড়ে পড়তে পারে। এ কারণে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরে আগের মতো ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। তবে যেকোনও সময় ঝড়ের এই গতিপথ বদলাতে পারে। তাই সবাইকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বিশেষ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মধ্যরাতে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে গতকাল রবিবার ছিল ১ হাজার ২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, যা মধ্যরাতে ১ হাজার ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ছিল।
একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এই ঝড়ের অবস্থান ছিল ১ হাজার ১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মধ্যরাত থেকে যা একই দিকে ১ হাজার ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ১ হাজার ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মধ্যরাতে ১ হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ১ হাজার ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, তা ১ হাজার ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে গতকালকের মতোই ২ নম্বর দুরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতের অর্থ হচ্ছে, দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার, বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে বিপদে পড়তে পারে।
এদিকে নদীবন্দরের জন্য দেয়া সতর্কতাবাতায় বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাংগাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর গুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার ২৪ ঘন্টায় পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সাথে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, নোয়াখালীর মাইজদীকোর্ট, ফেনী, খুলনা ও যশোর জেলাসহ সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। এতে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন