প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৫১
৩ মাস পর সুন্দরবনে জেলেরা
তিন মাস বন্ধের পর বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন। গতকাল ভোর থেকেই পাশ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করছেন উপকূলীয় জেলেরা। দীর্ঘদিন পর প্রবেশ করতে পেরে খুশি তারা।
৬ নম্বর কয়রার জেলে ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘অনেক দিন বনে ঢুকতে পারলাম। বনে যেতে না পেরে ধার-দেনায় ডুবে আছি। এখন মাছ আহরণ থেকে আয় দিয়ে দেনামুক্ত হবো।’
গোবরার মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে এসে লাইন দিই। এখানে নৌকার সাইজ দেখিয়ে পাশ নিতে হয়। এরপর সুন্দরবনে ঢুকতে পেরেছি।’
কাশিয়াবাদ স্টেশনের কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘প্রথম দিনে পাশের জন্য ভোর থেকেই চাপ ছিল। বেলা ১১টার মধ্যে ২৫০টি পাশ দেওয়া হয়। পাশ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।’
সাতক্ষীরা রেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া আহরণের জন্য বোর্ড লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) নিতে হয়। সাতক্ষীরা রেঞ্জে রয়েছে দুই হাজার ৯০০টি নৌকা। এর মধ্যে নবায়ন হয়েছে ২৭৯৬টি। বিভিন্ন কারণে বাতিল হয়েছে ১০৪টি। মধু মোম সংগ্রহের বিএলসি ৩০০, গোলপাতা ২৮ ও লবণপানির রয়েছে ১০টি বিএলসি।
বুড়িগোয়ালিনীর কাঁকড়া আহরণকারী জেলে আনিছুর রহমান বলেন, ‘সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরে সংসার চালাই। তিন মাস পাস বন্ধ থাকায় পরিবারের ওপরে আর্থিক প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকারি কোনও সহায়তা না পাওয়া এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’
গাবুরার জেলে আহাদ আলী বলেন, ‘তিন মাস বনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এই সময়ে আমাদের অন্য কোনও কাজ ছিল না। দীর্ঘদিন পরে সবাই বনে যেতে পারছি। তাই নৌকা ও জাল মেরামত করতে কাজ করছি।’
নীলডুমুর ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলে বাওয়ালীরা কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারেনি। তাই জেলে বাওয়ালদের সঙ্গে ট্রলার মালিক ও শ্রমিকদের দুর্দিন গেছে।’
বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা নুর আলম জানান, বর্ষা মৌসুমে সুন্দরবনের অধিকাংশ প্রাণীর প্রজনন হয়। এই সময়ে যাতে বন্যপ্রাণীদের কোনও ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়ে থাকে।