শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৮:১২

ঘোষণার আগেই বাড়লো চিনির দাম

ঘোষণার আগেই বাড়লো চিনির দাম
অনলাইন ডেস্ক

সরকার চিনির দাম বাড়ায়নি। কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছিল বাড়তে পারে চিনির দাম। এর মধ্যে ডলারের দাম বেড়ে আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বাজারে চিনির দাম বাড়াতে প্রস্তাবও করেছে চিনি পরিশোধনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এরপরই অস্থির হয়ে উঠেছে চিনির বাজার। দাম বাড়ানোর ঘোষণার আগেই খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়ে ৯০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।

সরেজমিনে বাড্ডা, রামপুরা ও মালিবাগ ঘুরে কোথাও খোলা চিনি কেজি ৯০ টাকা নিচে বিক্রি হতে দেখা যায়নি। দুদিন আগেও ৮২ থেকে ৮৫ টাকা ছিল। এছাড়া প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে কোম্পানি ভেদে ৯৫ টাকা পর্যন্ত। আর সরকারি সুগারমিলের চিনির কেজি ৮৫ টাকা।

হঠাৎ চিনির দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মধ্যবাড্ডা বাজারে সুজন স্টোরের দোকানি শামসুল আলম বলেন, পাইকারি বাজারে শুক্রবার প্রতি বস্তা চিনির দাম কোম্পানি ভেদে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। সেজন্য খোলা বাজারেও দাম বেড়েছে।

‘এছাড়া কোম্পানিুগলো চিনির দাম বাড়াচ্ছে বলে শুনেছি। সে খবরের পর থেকে বাজারে চিনির সংকটও দেখা দিয়েছে।’ যোগ করেন তিনি।

এদিকে গত বুধবার (১০ আগস্ট) চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে নতুন দর নির্ধারণের আবেদন করেছে সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে নতুন মূল্য কত হতে পারে সে ব্যাপারে কোনো সুপারিশ করেনি তারা।

মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, প্রতি ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রার ৩০ টাকার মতো অবমূল্যায়ন হয়েছে। ডলারের তেজিভাবের কারণে চিনিতে শুল্কায়নের পরিমাণও বেড়ে গেছে। যে কারণে দাম বাড়াতে চাইছে তারা।

সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি চিনির খুচরা মূল্য ৭৪ টাকা থেকে ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত দুই মাসে বাজারে দাম একটু একটু করে বাড়তে থাকে।

সুগার রিফাইনার্স সমিতির চিঠিতে বলা হয়, চিনি পরিশোধনকারী কারখানাগুলো বিলম্বে মূল্য পরিশোধের সুবিধা নিয়ে ঋণপত্র খুলে থাকে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দেরিতে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের বিপরীতে অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে; ফলে বিপুল লোকসান গুনতে হচ্ছে কোম্পানিগুলোকে।

চিঠিতে বলা হয়, আগে যেখানে প্রতি টন চিনি আমদানিতে শুল্ক ছিল ২২ হাজার টাকা থেকে ২৩ হাজার টাকা, এখন দিতে হচ্ছে ২৮ হাজার টাকা থেকে ২৯ হাজার টাকা। এতে পরিশোধনের পর প্রতি টন চিনির মিলগেট দাম দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ টাকা থেকে ১ লাখ পাঁচ হাজার টাকা। অথচ বর্তমানে প্রতি টন চিনির মিলগেট মূল্য ৭৮ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা নির্ধারিত রয়েছে।

অন্যদিকে নতুন আমদানি শুল্ক অনুযায়ী প্রতি মণ চিনির মিলগেট মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৩ হাজার ৭০৩ টাকা থেকে ৩ হাজার ৮৮৮ টাকা। অথচ বর্তমানে প্রতি মণ চিনি ২ হাজার ৯০০ টাকা থেকে থেকে ২ হাজার ৯২০ টাকায় নির্ধারিত আছে। এই পরিস্থিতিতে খরচ অনুযায়ী দাম না বাড়ালে কারখানাগুলো ‘দেউলিয়া’ হয়ে যাবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত দুই দিনে বাজারে খোলা চিনির দাম কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়েছে। গত সপ্তাহে চিনি কেজিপ্রতি ৮০ টাকা থেকে ৮২ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছিল, এখন সেটা ৮২ টাকা থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বছর ব্যবধানে দেশে চিনির দাম ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর একই সময়ে প্রতি কেজি চিনি ৭০ থেকে ৭২ টাকা ছিল।

সূত্র: জাগো নিউজ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়