প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২২, ১৭:৩৪
উন্নয়নের লক্ষ্যে এশিয়া একসঙ্গে কাজ করতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে পারে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ ও পাল্টানিষেধাজ্ঞা-অবরোধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কারণে সারা বিশ্বের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
বৈঠককালে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে সমর্থন দেবে এবং একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই সংকট নিরসনে বাংলাদেশ চীনের সহযোগিতা চায়।
চীনা মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হলে চীন তার ভূমিকা পালন করবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, তারা এখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাসস্থান নির্মাণ করছে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নেও চীন বাংলাদেশকে সাহায্য করবে। ওয়াং ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাইওয়ান ইস্যুতে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
এ সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ‘এক চীন নীতিতে’ বিশ্বাসী এ কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে তার বন্ধুত্বকে মূল্যায়ন করে।
যেসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে চীন থেকে দেশে ফিরে এসেছে প্রধানমন্ত্রী তাদের পড়াশোনার জন্য ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্যও ওয়াং ইকে অনুরোধ করেন যাতে করে তারা তাদের শিক্ষা সম্পন্ন করার সুযোগ পায়।
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালের চীন সফরের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু পিপল’স রিপাবলিক অব চায়নার প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুংয়ের গুণমুগ্ধ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তার ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইয়ে তা উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভিডিও বার্তা দেওয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানান।
ওয়াং ই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বার্তা পাঠানোর জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
সূত্র : বাসস