রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে

প্রকাশ : ২২ জুন ২০২২, ১২:৫৮

যথাসময়ে বন্ধ হচ্ছে বিপণিবিতান, নিয়মের বালাই নেই মহল্লায়

যথাসময়ে বন্ধ হচ্ছে বিপণিবিতান, নিয়মের বালাই নেই মহল্লায়
অনলাইন ডেস্ক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে ২০ জুন (সোমবার) রাত ৮টার পর থেকে সারাদেশে দোকানপাট এবং বিপণিবিতান বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সে নির্দেশনা অনেকটাই মেনে চলছে রাজধানীর বড় শপিংমলগুলো। তবে পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ দোকানপাট যথাসময়ে বন্ধ হচ্ছে না।

সম্প্রতি সচিবালয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই রাত ১০টা পর্যন্ত এই নিয়ম শিথিল করার অনুরোধ জানান ব্যবসায়ীরা।

এর আগে, গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা এক চিঠিতে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান ও কাঁচাবাজার খোলা না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরে এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সানুগ্রহ নির্দেশনা দিয়েছেন।

সরেজমিনে রাজধানীর বড় শপিংমলগুলোকে এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার (২০ জুন) রাত ৮টায় গুলশান-১ নম্বর গোল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, গুলশান শপিং কমপ্লেক্সে রাত ৮টা বাজতেই দোকানপাট বন্ধ শুরু হয়। ১০ মিনিট পর ছয় তলা মার্কেটটির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন নিরাপত্তা কর্মীরা।

তবে এ সময় মার্কেটের নিচতলায় ফটোকপি, ফার্মেসি ও খাবার হোটেল খোলা রাখতে দেখা গেছে। এসব দোকানে যাতায়াতের জন্য উত্তর পাশে একটি ফটক খোলা রাখা হয়েছে। এই ফটক দিয়ে মার্কেটের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় সব দোকান বন্ধ পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় তলায় ফার্নিচারের দুটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাউকে দেখা যায়নি।

গুলশান শপিং কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা কর্মী জামাল হোসেন বলেন, রাত ৮টার পর সরকার যেসব দোকান বন্ধ রাখতে বলেছে, সেগুলো গত দুদিন ধরে নির্ধারিত সময়ই বন্ধ করছেন মালিকরা। আর যেসব দোকান তালিকায় নেই, সেগুলো রাত ১০টা বা তারপরও খোলা থাকে।

গুলশান শপিং কমপ্লেক্সের পশ্চিম পাশে ডিএনসিসি সুপার মার্কেট। রাত ৮টা ২০ মিনিটে মার্কেটের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এ সময় মালিকদের দোকান বন্ধ করে বাসায় যেতে দেখা যায়।

ডিএনসিসি মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সিরামিকের দোকানের ব্যবস্থাপক কামাল বলেন, সরকারের নির্দেশনার পর মার্কেট কর্তৃপক্ষ ৮টার সময় দোকানপাট বন্ধ করতে বলেছেন। গত দুদিন ধরে সেই নির্দেশনা মেনে চলছেন দোকানিরা।

তবে রাত পৌনে ৯টায় রাজধানীর মহাখালী ওয়ারলেস এলাকায় ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। এখানে যেসব দোকান বন্ধ থাকার কথা তার সবকটি খোলা রয়েছে। বিশেষ করে টেইলারিং, সিরামিক ও মুদি দোকানগুলো এ সময় খোলা ছিল।

এখানের সেঞ্চুরি টেইলার্সের মালিক রায়হান বলেন, রাত ৮টার পর শপিংমল বন্ধের কথা শুনেছি। মহল্লার ভেতর ছোটোখাটো দোকান বন্ধ করার বিষয়ে কিছু জানি না।

এদিকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় রাজধানীর নিউমার্কেট ও এর আশেপাশের সব মার্কেট আজ (মঙ্গলবার) বন্ধ ছিলো ৷ তবে এসব মার্কেটের সামনে রাস্তার পাশের কিছু দোকান খোলা ছিল। অবশ্য রাত ৮ টার পরই এসব দোকান বন্ধ করতে দেখা যায়। কিছু দোকানে ক্রেতা থাকায় সেগুলো কিছুটা দেরিতে বন্ধ করতে দেখা গেছে।

তবে আজিজ সুপার মার্কেটের খাবার ও ওষুধের দোকান ছাড়া প্রায় সব দোকান বন্ধ ছিল। আবার শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিচে ব্যাগের দোকান রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা দেখা গেছে।

রাত ৯টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে গিয়ে দেখা যায়, এখানের প্রায় অধিকাংশ দোকান খোলা রয়েছে। নাজিমুদ্দিন রোডের ইলেকট্রিক দোকানি মো. সুমন মিয়া বলেন, শুনেছি রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ রাখবে। কিন্তু আমাদের তো গলি এলাকা, তাই এখনো বন্ধ করিনি। খুলে রেখেছি, বেচাকেনা হবে এই আশায়।

অন্যদিকে, গুলিস্তান এলাকায় জুতার সবচেয়ে বড় পাইকারি মার্কেট ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণ। এই মার্কেটসহ আশেপাশের সবকটি মার্কেট রাত ৮টার দিকে বন্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আমরা মার্কেট খুলছি ও বন্ধ করছি। তবে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার অনুমতি দিলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।

এদিকে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতাল, রেলস্টেশন, বাসস্টেশন, বিমানবন্দর, হোটেল, নাপিত, ওষুধের দোকান, সিনেমা, থিয়েটার, ক্লাব, মিষ্টি ও ফুলের দোকান, ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস অফিসসহ অন্যান্য জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এই নিয়মের বাইরে থাকবে। এর বাইরে যেসব দোকানপাট খোলা থাকবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র: জাগো নিউজ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়