প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২২, ০৮:২৪
১১ বছর পর জনশুমারি, গণনায় ডিজিটাল পদ্ধতি
করোনাভাইরাস মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে কয়েক দফা পেছানোর পর আজ শুরু হলো কাঙ্ক্ষিত ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’। সপ্তাহব্যাপী এ শুমারি চলবে ২১ জুন পর্যন্ত। এটি দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি। দেশের মোট জনসংখ্যা এখন কত, তা জানতেই মূলত রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, বাসস্ট্যান্ডসহ দেশে এ ধরনের স্থানগুলোতে ভাসমান মানুষ গণনাসহ তাদের সম্পর্কে মৌলিক জনমিতিক, আর্থ-সামাজিক ও বাসগৃহসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হবে জনশুমারি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আওতায় এ শুমারির মূল তথ্যসংগ্রহ শুরুর আগে সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন চত্বরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন সার্বিক বিষয়ে উপস্থাপনা করেন।
শুমারির ইতিহাস
দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ দীর্ঘপথ পরিক্রমায় বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে দেশ। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বের অর্থনীতির চাকা পুনরায় সচল করতে তথ্যপ্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন ডিজিটাল উদ্যোগ মানুষকে দেখিয়েছে নতুন স্বপ্ন, নতুন পথ, জুগিয়েছে প্রেরণা। সরকারঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অবদান রাখার পাশাপাশি যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী, নির্ভুল তথ্য দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবারই প্রথম ‘ডিজিটাল শুমারি’ পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে।
জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়নে নিয়োজিত পরিকল্পনাবিদ, নীতিনির্ধারক, সরকারি-বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও এবং সর্বোপরি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য আর্থসামাজিক, জনতাত্ত্বিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, জাতীয় হিসাব নিরূপণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, সংকলন ও প্রকাশের গুরুদায়িত্ব জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে বিবিএস পালন করে আসছে। নিয়মিত এসব কার্যক্রমের মধ্যে জনশুমারি ও গৃহগণনা অন্যতম।
দেশে ১০ বছরে গড়ে বাড়ে দুই কোটি মানুষ
পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদমশুমারিকে ‘জনশুমারি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। জনশুমারি ও গৃহগণনা বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পরিচালিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপকভিত্তিক পরিসংখ্যানিক কার্যক্রম। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে প্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। তখন দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ। দ্বিতীয় আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালে, সেসময় মোট জনসংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৯৯ লাখ।
এরপর ১০ বছর পর পর দেশের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা যথাক্রমে ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালে ১১ কোটি ১৫ লাখ, ২০০১ সালে ১৩ কোটি ৫ লাখ ও ২০১১ সালে সর্বশেষ ১৪ কোটি ৯৮ লাখ জনসংখ্যা ছিল। গত শুমারিগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রতি ১০ বছরে গড়ে প্রায় দুই কোটি বেড়েছে। ১৫-২১ জুন সারাদেশে ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে ১৪ জুন দিনগত রাত ১২টা (শূন্য মুহূর্ত ১৫ জুন) ‘শুমারি রেফারেন্স পয়েন্ট/সময়’ হিসেবে এবং ১৫-২১ জুনকে ‘শুমারি সপ্তাহ’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের সংজ্ঞানুযায়ী শুমারি
একটি দেশ বা সীমানাবেষ্টিত অঞ্চলের সব ব্যক্তির জনতাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক তথ্য সংগ্রহ, সংকলন ও প্রকাশের সার্বিক প্রক্রিয়া হলো ‘জনশুমারি’। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর মাধ্যমে মূলত দেশের প্রতিটি বাসগৃহ, খানা ও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। শুমারির সামগ্রিক কার্যক্রম চারটি পর্যায়ে সম্পন্ন করা হচ্ছে। শুমারির প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম, মূল শুমারি বা তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা, শুমারি পরবর্তী যাচাই (পিইসি) জরিপ পরিচালনা এবং আর্থ-সামাজিক ও জনতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা।
জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রধান উদ্দেশ্য
দেশের প্রতিটি খানা ও খানার সদস্যদের গণনা করে মোট জনসংখ্যার হিসাব নিরূপণ, দেশের সব বসতঘর/বাসগৃহের সংখ্যা নিরূপণ, দেশের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণের নিমিত্তে তথ্য সরবরাহ এবং জাতীয় সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্য সরবরাহ।
যেসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর মাধ্যমে দেশের সব সাধারণ খানা, প্রাতিষ্ঠানিক খানা ও বস্তি খানা, ভাসমান/ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী, খানার বাসগৃহের সংখ্যা ও ধরন, বাসগৃহের মালিকানা, খাবার পানির প্রধান উৎস, টয়লেট সুবিধা, বিদ্যুৎ সুবিধা, রান্নার জ্বালানির প্রধান উৎস, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, বৈদেশিক রেমিট্যান্স ইত্যাদি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া গণনাকারীরা খানায় বসবাসরত সদস্যদের জনতাত্ত্বিক ও আর্থ-সামাজিক তথ্য যেমন- বয়স, লিঙ্গ, খানাপ্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, প্রতিবন্ধীতা, শিক্ষা, কর্ম, প্রশিক্ষণ, মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার, ব্যাংক/মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, জাতীয়তা, নিজ জেলা ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
প্রথমবারের মতো ডিজিটাল শুমারি
এবারের শুমারিতে ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাবলেট ব্যবহার করে কম্পিউটার অ্যাসিসটেড পারসোনাল ইন্টারভিউং (সিএপিআই) পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সহজে ও সুনির্দিষ্টভাবে শুমারির গণনা এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং কোনো খানা গণনা থেকে বাদ না পড়া বা একাধিকবার গণনা না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও গুগল সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ম্যাপ ব্যবহার করে সাময়িকভাবে নিযুক্ত গণনাকারীরা প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার নির্ধারিত গণনা এলাকার প্রতিটি বাসগৃহ, খানা ও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করবেন।
ডিজিটাল এ শুমারি বাস্তবায়নে সারাদেশে একযোগে তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার হবে তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাবলেট। মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবলেটসমূহ মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া মাঠপর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে গাজীপুর কালিয়াকৈরে স্থাপিত বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) টায়ার আইভি সিকিউরিটি সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঠপর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার পূর্ব পর্যন্ত সংগৃহীত সব তথ্য-উপাত্ত গোপন অবস্থায় থাকবে, যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এছাড়া একটি ওয়েবভিত্তিক ইন্টিগ্রেটেড সেনসাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) প্রস্তুত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে শুমারির যাবতীয় কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম রিয়েল টাইম মনিটর করা হবে। সর্বোপরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ফলে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সহজতর হবে এবং স্বল্পতম সময়ে শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ সম্ভব হবে।
গণনারকারীর অর্পিত কাজ ও সমন্বয়
মূল শুমারির প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় জোনাল অপারেশন সম্পাদন করা হয়েছে। শুমারির তথ্য সংগ্রহের জন্য গড়ে ১০০টি খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গণনা এলাকার জন্য একজন গণনাকারী এবং ৫ -৬ জন গণনাকারীর জন্য একজন সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা স্থানীয় শিক্ষিত যুবক-যুবমহিলা।
গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের (গড়ে ১২০ জন) কার্যক্রম তদারকির জন্য একজন জোনাল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পাশাপাশি সরকারের অন্যান্য দপ্তরের নিয়মিত কর্মচারী। জোনাল অফিসারদের কার্যক্রম তদারকির জন্য উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী, উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারীর কার্যক্রম তদারকির জন্য জেলা শুমারি সমন্বয়কারী, জেলা শুমারি সমন্বয়কারীর কার্যক্রম তদারকির জন্য বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সব পর্যায়ের সমন্বয়কারীরা বিবিএসের সদরদপ্তর ও মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা। অর্থাৎ শুমারির গুণগতমান নিশ্চিত করতে ছয়স্তর বিশিষ্ট মনিটরিং কার্যক্রমের পরিকল্পনা করা হয়েছে। গণনাকারী থেকে বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী পর্যন্ত সবার জন্য সুনির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক জিআইএস বেইজড ডিজিটাল ম্যাপ এরই মধ্যে প্রস্তুত ও সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক আইটি সাপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলাপর্যায়ে আইটি সাপোর্ট টিম গঠন করা হয়েছে।
দেশের প্রথম ডিজিটাল শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের নিমিত্ত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড (বিডিসিসিএল), বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া ব্যানবেইসের মাঠপর্যায়ে কর্মরত আইটি জনবল এ শুমারির কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে।
গণনার আওতায় আনায় অন্যতম লক্ষ্য
শুমারির তথ্য-উপাত্তের গুণগতমান নিশ্চিতকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে তিন ধাপে চারদিন করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে মনিটরিং কর্মকর্তা ও মাস্টার ট্রেইনারদের (বিভাগীয় ও জেলা শুমারি সমন্বয়কারী) প্রশিক্ষণ বিবিএস সদরদপ্তরে; দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী, জোনাল অফিসার ও আইসিটি সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ জেলাপর্যায়ে এবং তৃতীয় ধাপে গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ দুই পর্বে জোনপর্যায়ে (উপজেলা/পৌর/ইউনিয়ন/ওয়ার্ড) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া বিবিএস সদরদপ্তরে শুমারির একটি কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যা গত ৩০ মে থেকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। কল সেন্টারের নম্বর ০৯৬০ ২৯৯৮৮৭৭। কল সেন্টারে কল করে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি শুমারিতে নিয়োজিত বিভিন্নস্তরের কর্মীরা কারিগরি ও সাধারণ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে প্রয়োজনীয় সমাধান গ্রহণ করতে পারবেন।
শুমারি সফল করতে নানা প্রচারণা
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এ দেশের সব জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন। প্রচারের অংশ হিসেবে শুমারি চলাকালীন টিভি স্ক্রলিং দেওয়া হবে। ডকুড্রামা, জিঙ্গেল ইত্যাদি টেলিভিশন ও বেতারে সম্প্রচারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে নিয়মিত প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া প্রথাগতভাবে র্যালি, মাইকিং, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। শুমারির প্রথম দিন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। এ শুমারিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন (বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন) ও জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে দেশের সব টেলিকম অপারেটরের সহায়তায় সব মোবাইল গ্রাহকের মোবাইলে একাধিকবার শুমারিবিষয়ক ক্ষুদেবার্তা (এসএমএস) পর্যায়ক্রমে প্রেরণ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট গত ৭ জুন সন্ধ্যায় প্রকাশ করেছেন। শুমারি সম্পর্কে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে যে কোনো সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। শুমারি চলাকালে সব মোবাইল ফোন গ্রাহকদেরকে ভয়েস কল করবেন।
দেশব্যাপী জনশুমারির কাজে মোট ব্যয়
‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১’ শীর্ষক প্রকল্প ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায়। তবে করোনা মহামারির কারণে একবছর পিছিয়ে যায়। শুরুতে এ খাতে মোট ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। পরে প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় কিছুটা কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। প্রকল্পে ট্যাব (ট্যাবলেট পিসি) সরবরাহ করেছে বাংলাদেশি প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ৪৪৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭০ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব।
সূত্র: জাগো নিউজ