প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ১২:৪০
নারীরা পুরুষের চেয়ে ৮ গুণ বেশি মজুরিহীন গৃহকর্ম করেন : বিবিএস
গৃহস্থালি এবং পরিবারের সদস্যদের সেবা দেওয়ার কাজে পুরুষের তুলনায় নারীরা আট গুণ বেশি সময় ব্যয় করেন। এর জন্য তারা কোনো বেতন বা মজুরি পান না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর নতুন জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি এ জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
‘টাইম ইউজ সার্ভে ২০২১’ শিরোনামের ওই জরিপের তথ্য অনুযায়ী, পুরুষরা দিনে প্রায় ১ দশমিক ৬ ঘণ্টা ঘরোয়া ও যত্ন-আত্তির কাজে ব্যয় করেন, অথচ নারীরা প্রায় অর্ধেক দিন অর্থাৎ ১১ দশমিক ৭ ঘণ্টা এসব কাজ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব কাজ উৎপাদনশীল হিসেবে ধরা হয় না, তাই এগুলো মজুরিহীন এবং স্বীকৃতিবিহীন থেকে যায়।
এতে আরও বলা হয়, যদিও ঘরোয়া কাজ এবং যত্ন-আত্তির দায়িত্ব আমাদের ভবিষ্যৎ অগ্রগতির জন্য প্রতিদিনের কাজের অংশ, তাই পুরুষ ও নারীদের সমানভাবে করা উচিত। কিন্তু নারীরা বাড়তি বোঝা বহন করে।
মজুরিহীন ঘরের কাজের পাশাপাশি নারীরা উৎপাদনশীল কাজ করেন ১ দশমিক ২ ঘণ্টা এবং পুরুষরা এ ধরনের কাজ করেন ৬ দশমিক ১ ঘণ্টা। ফলস্বরূপ, পুরুষের কাজ নারীদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি স্বীকৃত পায়।
সময় ব্যবহারের ওপর গত বছর জাতীয় জরিপটি পরিচালনা করে বিবিএস। মূল উদ্দেশ্য ছিল ভালো পরিসংখ্যানের মাধ্যমে মজুরিহীন গৃহস্থালি এবং যত্ন-আত্তির কাজ এবং জাতীয় অর্থনীতির মধ্যে ঘাটতি পূরণ করা।
৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের এই মজুরিহীন গৃহকর্মের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য তা অবশ্য হ্রাস পায়। পুরুষদের জন্য এটি ধীরে ধীরে বাড়ে, তবে এর পরিমাণ খুব কম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পরিবার এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য মজুরিহীন পরিষেবায় ২৫-৫৯ বছর বয়সী নারীরা দিনে ৫ দশমিক ২ ঘণ্টা ব্যয় করে। অথচ একই বয়সের পুরুষরা দিনে শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা ব্যয় করে।
শহরাঞ্চলে নারীরা দিনে ৪ দশমিক ৪ ঘণ্টা এবং পুরুষরা শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা মজুরিহীন পরিষেবা এবং পরিবারের সদস্যদের যত্ন-আত্তির জন্য ব্যয় করেন। এটি গ্রামীণ এলাকায় নারী ও পুরুষের জন্য যথাক্রমে ৪ দশমিক ৭ ঘণ্টা ও শূন্য দশমিক ৬ ঘণ্টা।
জরিপে আরও দেখা গেছে, বিয়ের পর আরও বেশি পুরুষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যোগ দেয় এবং আরও বেশি নারী অবৈতনিক ঘরোয়া ও যত্ন-আত্তির পরিষেবাগুলোতে জড়িত হয়।
জরিপে দেখা গেছে, ৭২ দশমিক ৭৪ শতাংশ মতামতদাতা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এখানেও নারীরা পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে আছে। ৮৬ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষের তুলনায় মাত্র ৫৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নারীর মোবাইল ফোন রয়েছে।
জরিপে আরও দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষেরা বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। মোট ২৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ মতামতদাতা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ পুরুষ এবং ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ নারী।