শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ৩৩ °সে

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২২, ০৮:৩৬

৩৮ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক

৩৮ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক
অনলাইন ডেস্ক

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য কোনো স্বস্তির খবর নেই। কারণ, তাদের জন্য তেমন একটা করছাড় নেই, বরং কিছু ক্ষেত্রে নিয়মকানুন কঠোর করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর নতুন বাজেট প্রস্তাবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য প্রথম অস্বস্তির খবরটি হলো, তাঁদের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়েনি। ফলে তাদের আগের মতোই বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকা হলেই কর দিতে হবে। আবার বছর শেষে রিটার্নও দাখিল করতে হবে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সাধারণ করদাতাদের একটু স্বস্তি দিতে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। তিন মাস ধরেই মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের বেশি। এর মানে, সংসার খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। ব্যক্তিশ্রেণির যেসব করদাতার বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকার কিছুটা বেশি, তাঁদের খরচ বেড়েছে। কিন্তু নতুন অর্থবছরেও তাঁদের আগের মতোই কর দিতে হবে। এই কর অনেকের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে যেতে পারে। কষ্টের সময়ে যাঁরা করমুক্ত আয়ের সীমার একটু ওপরে থাকবেন, তাঁদের ভুগতে হবে।

করমুক্ত আয়সীমা তো বাড়েনি; বরং কিছু সেবা পেতে হলে বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। যেমন কেউ যদি ব্যাংকের সুদ আয় তুলতে যান, তাহলে উৎসে কর কেটে রাখে। এত দিন কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদ দেখালেই সুদ আয়ের ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর কাটত। এখন থেকে এই সুবিধা পেতে হলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র ব্যাংকে দেখাতে হবে। টিআইএন সনদের পরিবর্তে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দাখিলে ব্যর্থ হলে ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর কাছ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি হারে উৎসে কর কেটে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে।

নতুন বাজেটে ৩৮ ধরনের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে বিষয়টি একটু ঘুরিয়ে করা হয়েছে। যে দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে এসব সেবা নেওয়া হবে, সেসব প্রতিষ্ঠান যদি সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখতে না চেয়ে সেবা দিয়ে দেয়, তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে। যেসব সেবা পেতে রিটার্ন জমা দিতে হবে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণের জন্য আবেদন, পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ, কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হওয়া, ব্যবসায়িক সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ, সন্তান বা পোষ্যের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ালেখা করা ও অস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়া। এ ছাড়া উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।

এত দিন শুধু এসব খাতের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু এবার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দাখিলপত্র দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

টিআইএনধারীদের মধ্যে যারা এত দিন রিটার্ন দাখিল করেননি, এবার তাঁদের জন্য সুখবর আছে। কোনো জরিমানা ছাড়াই তারা রিটার্ন দিতে পারবেন।

এত দিন ছোটখাটোসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে টিআইএন সনদ ঝুলিয়ে রাখতে হতো। এখন থেকে টিআইএন সনদ নয়; রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র প্রদর্শন করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়