প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৬
থানার ভেতর ওসির মরদেহ, অনুসন্ধানে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন
শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। আত্মহত্যার ঘটনায় নিহতর ভাই আবুল কালাম বাদি হয়ে জাজিরা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।
এছাড়া ঘটনা তদন্ত করতে তিন সদ অনুসন্ধান কমিটি করেছেন পুলিশ সুপার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আল-আমিনের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় শরীয়তপুর পুলিশ লাইনস মাঠে জানাজা শেষে তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য নেয়া হয়েছে। নিহত ওসি আল-আমিনের বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদি উপজেলার কাঁচিচর এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে থানার দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যরা থানার চারতলা ভবনের দোতলায় ওসির শয়ন কক্ষে জানালার সঙ্গে আল-আমিনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে ঢাকার সিআইডি ফরেনসিক টিম এসে সুরতহাল শেষ করে সন্ধ্যার পর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ ও পরিবার বলছে গত দুই বছর যাবৎ তিনি বিভিন্ন মানসিক চাপে ভুগছিলেন। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেন আল-আমিন। প্রায় চার মাস যাবত ভালোভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে তিনি বরগুনা জেলার গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
নিহত ওসি আল-আমিনের ভাই আবুল কালাম বলেন, “ভাইর মৃত্যুতে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। হয়তো তার কোন কাজের চাপ ছিল বা সিনিয়রের চাপ ছিল এজন্যই এমন ঘটনা ঘটতে পরে। এছাড়া থানার কাজের প্রেশার নিয়েও চিন্তা করতে দেখেছি ভাইকে। আমার জানামতে পারিবারিক কোন চাপ ছিল না। ভাইর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত চাই।”
শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওসি আল-আমিনের মরদেহ ঝুলে আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে কিছু ঔষধ পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করা হয় ডিপ্রেশন ও মানসিক সমস্যার জন্য।”
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ব্রেইন ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মুনতাসির খান বলেন, “বেশির ভাগ সময় মন খারাপ, কাজ ভালো লাগে না, আগ্রহ নেই, খাওয়া-দাওয়ায় বেশি বা কম, জিনে সমস্যা দেখা দেয়া, ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়া, নিজেকে কম মূল্যায়ণ মনে হয়, আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসাসহ এমন ৯টি লক্ষ্মণ হলে বুঝতে হবে ডিপ্রেশন। এই লক্ষ্মণের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও আত্মহত্যা করছে।”
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ডিপ্রেশনের বিষয়টি গোপনে রাখা হয়েছিল, পরবর্তীতে পরিবার থেকে জানা গেল তিনি ডিপ্রেশনে ভূগছিলেন। ওসির মৃত্যুতে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এছাড়াও তিন সদস্য একটি অনুসন্ধান কমিটি করা হয়েছে।