মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫০

গাউসুল আজম মার্কেট দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার আঁচে পুড়ছে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন

গাউসুল আজম মার্কেট দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার আঁচে পুড়ছে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন
অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর নীলক্ষেতের প্রাণকেন্দ্র গাউসুল আজম সুপার মার্কেট এখন দখলদারিত্বের আগুনে জ্বলছে। একসময় ব্যবসায়ীদের সুশৃঙ্খল বাণিজ্যের অন্যতম আস্থার প্রতীক এই মার্কেট আজ ভয় আর অনিশ্চয়তার আবর্তে আটকা পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে সাবেক এক ছাত্রদল নেতা ক্ষমতার জোরে মার্কেটটি দখল করে নিয়েছেন। এর ফলে ব্যবসায়ীদের জীবিকা প্রায় থমকে গেছে।

২০০০ সালের শেষ দিকে ব্যবসায়ী মোতালেব মিয়া গাউসুল আজম সুপার মার্কেট প্রতিষ্ঠা করেন। তার দক্ষ তত্ত্বাবধানে মার্কেটটি হয়ে উঠেছিল ব্যবসায়ীদের নির্ভরতার জায়গা। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে তিনি দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় মার্কেট পরিচালনা করেছেন।

কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রাজনীতিতে যে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে, তার আঁচ এসে পড়েছে এই মার্কেটে। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের প্রাক্তন যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন একদল সশস্ত্র ব্যক্তিকে নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ করেন এবং মোতালেব মিয়াকে হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক মার্কেট থেকে বের করে দেন।

মার্কেট থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর গুরুতর আহত মোতালেব মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। বর্তমানে মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ দখলকারী গোষ্ঠী ব্যবসায়ীদের উপর চাঁদাবাজি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং নানা রকমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।

এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমাদের ব্যবসা চালানো এখন দুঃস্বপ্ন। প্রতিদিন চাঁদা দাবি করা হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ায় কাজও করতে পারছি না। প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।”

অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, “মোতালেব ভাইয়ের সময়ে আমরা শান্তিতে কাজ করতাম। এখন প্রতিটি মুহূর্তে ভয় পেতে হচ্ছে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাকে দোকান বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়।”

অস্থিরতা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবসায়ীরা সমবায় অধিদপ্তরের কাছে একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। তাদের দাবি, মার্কেট পরিচালনায় একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করা হোক।

এ দিকে অভিযুক্ত কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়