প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪২
কোটা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, আমরা চাই কোটার বিষয়টি সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি হয়ে যাক।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
কোটা সংস্কার কমিশন গঠন করা হবে কি না- জানতে চাইলে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, সবকিছুই সম্ভব যদি এখানে আদালতের বিষয় না থাকত। আদালতের বিষয় আদালতে সমাধান হোক। এই সমাধানের পর যদি আরও কিছু আলোচনা করতে হয়, সেটি করার জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত আছি।
মন্ত্রী বলেন, দেশের কল্যাণে, আমাদের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে, আমাদের সন্তানদের কল্যাণে যা করা লাগে আমরা সবকিছু করতে প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, তারা ভালো আইনজীবী নিয়ে যদি আদালতে যান, তাহলে সেটার সমাধান হবে। আমি মনে করি, কোটার সংস্কার দরকার, যেটা এরই মধ্যে আমরা বলেছি। আমাদের মেয়েরা যেভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিষয়টি সংবিধান খুব সুন্দরভাবে দেখেছেন- নারী-পুরুষের কাজের সমতা যাতে থাকে। এটার মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের সমাজব্যবস্থাকে সুন্দর করতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন, তাদের কথাগুলো থাকবে। সব সমন্বয় করে সেখান (আদালত) থেকে সমাধান হবে। আপনাদের একটা পরিসংখ্যান দিচ্ছি। ৪০তম বিসিএসে সতের জেলা থেকে পুলিশে ছেলে-মেয়ে কেউই সুযোগ পায়নি। ৫৯টি জেলা থেকে মেয়েদের কেউই সুযোগ পাননি। বিষয়টি হচ্ছে, কোটা বিষয়ে আলোচনার ভিত্তিতে যৌক্তিক আলোচনা হতে পারে। কোটা কতটুকু থাকবে, সেটা আলোচনা হতে পারে।
তিনি বলেন, কোটাবিরোধীরা যখন আদালতে যাবেন, তাদের যুক্তি যখন আদালত শুনবেন, তাদের বোনদের কী হবে, জেলা কোটার কী হবে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা পোষ্যদের জন্য কী হবে, সেটা বিস্তারিত আলোচনা হলে সমাধান সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, রাস্তা-ট্রেন অবরোধ হওয়ার কারণে আমাদের খাবারের সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হচ্ছে। এতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বেশি দামে জিনিস কিনতে হচ্ছে। তার বাবা অফিসে যেতে পারছেন না, ছোট ভাইটি স্কুলে যাতে পারছেন না। সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে। এতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কাজেই এটা নির্বাহী বিভাগের সমাধান করার বিষয় নয়, এটা করবে আদালত ও বিচার বিভাগ।
একটা পক্ষ না থাকায় অন্যপক্ষের কথা আদালত বিবেচনায় নিয়েছেন, নির্বাহী বিভাগের অনেক নির্দেশনা আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে। সংবিধানও সেই অনুমোদন দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বলব, কারও মাধ্যমে প্ররোচিত হবেন না। একদল লোক আছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়, বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর বুধবার (১০ জুলাই) চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। অর্থাৎ কোটা পদ্ধতি এই মুহূর্তে বাতিল থাকছে।