রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৪, ০২:২৯

জবি শিক্ষার্থী তিথির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড

জবি শিক্ষার্থী তিথির পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
অনলাইন ডেস্ক

ফেসবুক পোস্টে ধর্ম অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়েছে, এ মামলায় তিথি সরকারের ২২ মাসের কারাবাস পাঁচ বছরের সাজা থেকে বাদ যাবে।

আদালতে তিথি সরকারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাবিবুল্লাহ হাবিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নজরুল ইসলাম শামীম।

নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, তিথি সরকারের আইনজীবী প্রবেশন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে তাকে এক বছরের জন্য প্রবেশনে দিয়েছেন। নিমমিতভাবে তাকে প্রবেশন কর্মকর্তার কাছে হাজিরা দিতে হবে।

আদালত বলে দিয়েছেন, প্রবেশনের এক বছরে তার মানসিকতার পরিবর্তন না ঘটলে প্রবেশন বাতিল করা হবে।

প্রবেশন হচ্ছে দণ্ডিতকে কারাগারে পাঠানোর পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরিবার বা সংস্থার অধীনে রেখে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া। এ সময় নিয়মতান্ত্রিক জীবন-যাপন ও আদালতের দেওয়া শর্ত মেনে চলতে হয়।

রায় ঘোষণার আগে তিথি সরকারকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের দেওয়া সাক্ষ্যে কী কী বলা হয়েছে, তা তিথিকে পড়ে শুনিয়ে জানতে চাওয়া হয় তিনি দোষী না নির্দোষ। তিথি দোষ স্বীকার করলে বিচারক রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।

২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর তিথি সরকারের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। যেখানে ইসলামিক শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, আহলে হাদিসের মতো ধর্মভিত্তিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কর্মীরাও। এর আগের দিন ২৩ অক্টোবর ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাকড’ হয়েছে জানিয়ে ক্ষতির শঙ্কা প্রকাশ করে পল্লবী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তিথি।

পরে ২৫ অক্টোবর সকালে পল্লবী থানার উদ্দেশে কালশীর বাসা থেকে বেরিয়ে তিথি আর না ফেরায় ২৭ অক্টোবর থানায় জিডিও করেন তিথির বড় বোন স্মৃতি সরকার। নিখোঁজের ১৮ দিন পর নরসিংদীর মাধবদীর পাঁচদোনায় স্বামীর এক দূরসম্পর্কীয় আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আত্মগোপনে থেকে তিথি অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন বলে ভাষ্য ছিল পুলিশের।

এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ওই বছর ২৭ অক্টোবর তিথিকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক ছিলেন তিথি সরকার। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠার পর সে সংগঠন থেকেও তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

তিথি সরকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী। ২০২০ সালে ৫ নভেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন একই বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী আবু মুসা রিফাত। ২০২১ সালের ১১ মে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের এসআই মেহেদী হাসান দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর তিথি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন আদালত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়