প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪, ০৯:১০
দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ইইউর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশ জ্ঞান, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও কর্মসংস্থানের ওপর বিশেষ গুরুত্বসহ ভবিষ্যতে বিস্তৃত অংশীদারত্বের লক্ষ্যে কাজ করছে।
সরকারি সফরে বর্তমানে ইউরোপে অবস্থান করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের ঐতিহ্যবাহী ‘সের্কেল রয়্যাল গেলুয়া সেন্টারে’ স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দূতাবাস এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশি বন্ধুদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় বিষয়সংক্রান্ত মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশীয় প্রশান্ত অঞ্চল ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিকলাস কাভার্নস্টর্ম, সম্মানিত অতিথি হিসেবে এবং বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে দেশের মিশনপ্রধান মাহবুব হাসান সালেহ বক্তব্য দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, গত দেড় দশকে অর্জিত টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে এশিয়া এবং এর বাইরেও দ্রুততম বর্ধনশীল একটি অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফরের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন এবং আগামী দিনে বেলজিয়াম এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, জনযোগাযোগ, সুনীল, বৃত্তাকার অর্থনীতিসহ নিরাপত্তার প্রচলিত এবং অপ্রচলিত ক্ষেত্রগুলোয় বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে হাছান মাহমুদ আশা প্রকাশ করেন।
ইইউ এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিকলাস কাভার্নস্টর্ম বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, ন্যায়বিচার, সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে, যা বিদ্যমান অংশীদারত্বমূলক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে চলেছে। তিনি শিগগিরই বাংলাদেশের সঙ্গে পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো–অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে ইইউয়ের আগ্রহের কথা জানান।
বেলজিয়াম সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বেলজিয়ামের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড আগামী দিনে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে নতুন রূপ দেবে।
রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্র, সরকার ও বন্ধুদের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং এ ক্ষেত্রে বেলজিয়াম এবং ইইউয়ের সঙ্গে নিবিড় অংশীদারত্বমূলক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সম্মানিত অতিথিদ্বয় ও রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ এ সময় স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি কেক কাটেন।
বেলজিয়াম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা, রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য, বেলজিয়ামের রাজনীতিকরা এবং গণমাধ্যম, থিংক ট্যাঙ্কস, একাডেমিয়া, ব্রাসেলসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।