রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৬

দেশে ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় সময়ের দাবি : সিআইডি প্রধান

দেশে ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় সময়ের দাবি : সিআইডি প্রধান
অনলাইন ডেস্ক

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেছেন, ফরেনসিকের বিষয়ে বিশেষায়িত শিক্ষার জন্য আমাদের দেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু ভারতে আছে। আমরা চেষ্টা করছি ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার জন্য।

তিনি বলেন, ফরেনসিকের ওপর আপাতত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা স্বতন্ত্র বিভাগ চালু এখন সময়ের দাবি। ঢাবির বর্তমান উপাচার্যের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি সহসা এ ব্যাপারে একটা উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) মালিবাগের সিআইডি সদরদপ্তরে “Students' engagement to combat cybercrime'' শীর্ষক সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিআইডি প্রধান বলেন, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, তারাই হবে জাতির কর্ণধার ও দেশ গড়ার কারিগর। সাইবার বুলিং, সাইবার হ্যারাজমেন্ট, আনইথিক্যাল কনটেন্ট, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার ও র‌্যানসমওয়্যার ইত্যাদি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীতে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্ম তথা শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে সাইবার অপরাধ নিবারণে সক্রিয় হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিআইডির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এই প্রশিক্ষণের পর থেকে সিআইডির এম্বাসেডর হিসেবে সাইবার অপরাধ নিবারণ এবং সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য সিআইডিকে অবহিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মেধাস্বত্ব পাচার, পাইরেটস বই পাচার হচ্ছে- এক্ষেত্রে প্রতিকার কী বা সিআেইডি কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের আছে। মানি লন্ডারিং আইনের মধ্যেই কপিরাইট সংক্রান্ত ধারা আছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে বা অভিযোগ করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে সাধারণত এ সংক্রান্ত মামলা থানায় হয় না। এ সংক্রান্ত মামলা আদালতে হয়।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১ জন, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৫৩ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জন, বাংলাদেশস্থ কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন এবং গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জনসহ মোট ২৪৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিআইডি'র সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপস বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (পদোন্নতিতে এডিশনাল ডিআইজি) তৌহিদুল ইসলাম, ডিজিটাল ফরেনসিক বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিজিটাল ফরেনসিক বিভাগের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল হক, প্রশ্নোত্তর পর্বে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন আইএনটিআই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়ার সহযোগী অধ্যাপক ড. খান সরফরাজ আলী। সিআইডি’র অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন ও ফরেনসিক) তানভীর হায়দার চৌধুরী সভাপতি হিসেবে সমাপনী বক্তব্য রাখেন।

সাইবার ক্রাইম, সাইবার নিরাপত্তা আইন, সিআইডি, অপরাধ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাজধানী, তথ্যপ্রযুক্তিসাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দেশে ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয় সময়ের দাবি: সিআইডি প্রধান

সিআইডি জানিয়েছে, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের ফলে মানুষ প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আমাদের দৈনন্দিন সব কাজই কোনো না কোনোভাবে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। এখন মানুষ খুব সহজে সেকেন্ডের মধ্যে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারছে। এতে করে মানুষ যেমন সুবিধাভোগ করছে, তেমনই কিছু ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে।

দুষ্কৃতকারীরা এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ যেমন- সাইবার প্রতারণা, অর্থ লোপাট, সাইবার অ্যাটাক, মাদক ও মানবপাচার, পর্নোগ্রাফি, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার, র্যানসমওয়্যার, ডেটা ব্রিচ, সাইবার বুলিং ইত্যাদি সংগঠিত করছে।

এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সিআইডি, বাংলাদেশ পুলিশ অপরাধীদের আইনের আওতায় আনাসহ সামাজিক সচেতনতা তৈরিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন।

সেমিনারের প্রশ্নোত্তর এবং উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে আগত তরুণ শিক্ষার্থীরা প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা সাইবার অপরাধ সম্পর্কে নিজেদের সমৃদ্ধ করেন এবং তাদের মতামত প্রকাশ করেন।

সেমিনার শেষে প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করেন এবং শিক্ষার্থীরা সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবগুলো পরিদর্শন করেন।

সেমিনারে সোশ্যাল মিডিয়াসহ ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে নানা ধরনের জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ, সাইবার অপরাধ, সাইবার চাঁদাবাজি, মাদকপাচার, অর্থপাচার, নানা ধরনের প্রতারণার ফাঁদ ও হ্যাকিং নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। সিআইডি’র পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, তথ্য শেয়ারিং ও নিজ নিজ জায়গা থেকে চেঞ্জ মেকার হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়