প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৬
দেশ বিক্রির চুক্তি করিনি, করবোও না : নৌ প্রতিমন্ত্রী
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশ বিক্রির চুক্তি করিনি, সামনেও করবো না।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেটে বসানো স্ক্যানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে সব বন্দরে স্ক্যানার বসানোর জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখন অনেক স্ক্যানার বসানো হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাস্টমসের বোঝাপড়ার অভাব ছিল। কয়েক বছরের অনেক সমস্যা গত তিন চার বছরেই সমাধান হয়েছে। এটা বড় প্রাপ্তি বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এটি হয়ে গেলে মেরিটাইম সেক্টরে আমরা অন্যরকম উচ্চতায় চলে যাব। বে-টার্মিনালে ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসবে। এতে ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। যার জন্য অবকাঠামো তৈরি প্রয়োজন।
‘প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর করেছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর করেছেন। ডেনমার্ক পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখিয়েছে। সৌদি আরব আবরও বিনিয়োগ করতে চায়। বিদেশিরা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে মনে করেন।’
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের ১০০ শীর্ষ বন্দরে চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বন্দর এগিয়ে চলছে। বন্দরের পিসিটিতে সৌদিভিত্তিক রেড সি গেটওয়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বে টার্মিনালের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রথমবারের মতো আধুনিক স্ক্যানার স্থাপন করেছি। স্ক্যানার দুইটি কাস্টম হাউস অপারেট করবে। এর ফলে দ্রুততম রফতানি কনটেইনার জাহাজীকরণ সম্ভব হবে। বন্দরের নিরাপত্তা ও ভাবমূর্তি বাড়বে।
প্রকল্প পরিচালক সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে ৮৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় সংগৃহীত এফএস৬০০০ মডেলের রেডিও একটিভ পোর্টাল মনিটর সমৃদ্ধ এ স্ক্যানার ঘণ্টায় ১৫০টি কনটেইনার স্ক্যান করতে পারে। ইস্পাতে এক্স-রে অনুপ্রবেশ ক্ষমতা ৩৩০ মিলিমিটার। ডুয়েল এনার্জির এ স্ক্যানার বোথওয়ে স্ক্যানে সক্ষম। উচ্চতর স্ক্যানিংয়েও এক্স-রে চিত্র অবিকৃত থাকে। জৈব, অজৈব ও মধ্যবর্তী উপাদান নির্দিষ্ট রঙে চিহ্নিত করে। ফলে আইজিএম বহির্ভূত পণ্য শনাক্ত করা যাবে। ট্রেইলার চালক সরাসরি স্ক্যানিং টানেলের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালাতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনটেইনার স্ক্যান হয়ে যায়। কনটেইনার নাম্বারও স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত হয় স্ক্যানারে। স্থাপন করা হয়েছে ৪টি ইমেজ মনিটরিং সেন্টার ও রিয়েল টাইম সিসিটিভি সিস্টেম।
২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এ প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয়। ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর মন্ত্রণালয় দরপত্র অনুমোদন দেয়। ১২ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ফাইভ আর অ্যাসোসিয়েটকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি চুক্তি সম্পাদন এবং ২৭ ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। আইএসপিএসের আলোকে বন্দরের সব রফতানি গেটে কনটেইনার স্ক্যানার নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেভির এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আজিম, চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফাইজুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।