প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:০০
নাশকতার শঙ্কায় ট্রেনে ধীরগতি, শিডিউল বিপর্যয়
নাশকতার শঙ্কায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়ায় পাকশী রেলওয়ে বিভাগের প্রতিটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। প্রতিটি ট্রেন এক থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, এ স্টেশন হয়ে চলাচলকারী প্রতিটি ট্রেন এক থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি বিলম্বে চলছে চিলাহাটি-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন’। এ ট্রেন সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকলেও এটি সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে প্রবেশ করে। এছাড়া ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি ১০টা ২১ মিনিটে থাকলেও ট্রেন স্টেশনে আসে ১টা ৫০ মিনিটে, একতা এক্সপ্রেস ৩ ঘণ্টা, পদ্মা এক্সপ্রেস দেড়ঘণ্টা, বনলতা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা, দ্রুতযান তিন ঘণ্টা, নীলসাগর এক্সপ্রেস চার ঘণ্টাসহ রংপুর এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, ঢালারচর এক্সপ্রেসসহ সব ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে।
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটির ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে যাত্রাবিরতি ১টা ২০ মিনিটে। অথচ ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ করে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে। খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন বেলা ১১টায় যাত্রাবিরতি থাকলেও ২টা ৩০ মিনিটে স্টেশনে প্রবেশ করে। চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর ২টায় যাত্রাবিরতি থাকলেও স্টেশনে আসে সন্ধ্যা ৬টা ৩ মিনিটে। ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন স্টেশনে আসে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট দেরিতে। এছাড়া সাঁগরদাড়ি এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদী কমিউটার, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বিলম্বে চলাচল করছে।
ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি বিলম্বে চলছে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন। এটি প্রায় আট ঘণ্টা বিলম্বে চলছে।
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মহিবুর ইসলাম বলেন, রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিদের্শনা অনুযায়ী প্রতিটি ট্রেন গতি কমিয়ে চলছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেনে নাশকতা বেড়ে যাওয়ায় সব ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিনে ব্রডগেজ লাইনে ট্রেন ৯০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করে। এটি কমিয়ে ৭৫ কিলোমিটার করা হয়েছে। রাতে ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে চললেও এখন তা কমিয়ে ৫০ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাতে ‘ট্রেন পাইলটিং পদ্ধতি’ চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ রাতের একটি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে আরেকটি ট্রেনের লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ওই রেলরুটে পাঠানো হয়। এ রেল ইঞ্জিনের কাজ হলো ট্রেন লাইন নিরাপদ রয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা করা। এটি সপ্তাহখানেক ধরে চলছে। আজ রাতেই হয়তো ট্রেন পাইলটিং পদ্ধতি শেষ হয়ে যাবে।