প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:১৭
স্বাগত ২০২৪, প্রত্যাশার নতুন আলো
নতুন দিনের আভায় পুবের আকাশে উদিত হয়েছে নতুন সূর্য। ছড়িয়ে পড়েছে তার আলো কুয়াশার চাদর ভেদ করে। আজকের সূর্যোদয় নিয়ে এসেছে নতুন বারতা, নতুন আনন্দধারা। বিগত দিনের সব ভুল, হতাশা, দুঃখ, গ্লানি মুছে দিয়ে আজ শুরু হবে নতুন উদ্যমে সফলতার পানে এগিয়ে চলা। আজ ২০২৪ সালের প্রথম সূর্যোদয়। এতে আছে অন্ধকার কেটে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। সকালে খ্রিষ্টীয় নতুন বছরের সূর্যোদয় হলেও ঘড়ির কাঁটা রোববার রাত ১২টা অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গেই গণনা শুরু হয়েছে নতুন বছরের। নতুন বছর মানেই নতুন প্রত্যাশা। উদ্যম আর সাহস নিয়ে আবারও পথচলার শুরু।
খ্রিষ্টীয় নতুন বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, করোনা অতিমারি ও বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের ফলে বাংলাদেশেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়েছে। আমাদের আশপাশের অনেক মানুষই কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। নববর্ষে আমরা একে অন্যের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই-এই হোক ইংরেজি নববর্ষ-২০২৪ এর প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, আজ আমরা যে সময়কে পেছনে ফেলে নতুন দিনের আলোয় উদ্ভাসিত হতে যাচ্ছি, সে সময়ের যাবতীয় অর্জন আমাদের সম্মুখযাত্রার শক্তিশালী সোপান হিসাবে কাজ করছে। তাই নতুন বছরের এ মাহেন্দ্রক্ষণে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নতুন নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির নতুন শিখরে আরোহণের সোপান রচনা করার অনুপ্রেরণা। নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও জোরদার হোক, সব সংকট দূরীভূত হোক, সব সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সবার জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনীতিসহ নানা কারণে ২০২৪ একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ বছর নির্বাচনের আগে ও পরে কী হতে যাচ্ছে, সেদিকেই সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেশের মানুষের। পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও দেশের মানুষের সার্বিক কামনায় থাকবে।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার যে ধারাবাহিকতা চলছে, ২০২৪ সালে তাতে যুক্ত হবে নতুন মাত্রা। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতিক-সব ক্ষেত্রে দেশ আরও এগিয়ে যাবে, এমন প্রত্যাশা সবার। গত বছর যে আশা নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল, এর অনেকখানি হয়তো পূরণ হয়নি। কিন্তু তাতে কী! নতুন উদ্যম নিয়ে এগিয়ে গেলে সাফল্য আসবেই। আজকের দিনে দেশবাসীর এ প্রত্যয়।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি এ নির্বাচন বর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বছরের শুরুতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনই দেশের মানুষের সবচেয়ে আগ্রহের বিষয়। কারণ, এ নির্বাচনে জয়ী হলে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করবে। সেক্ষেত্রে শরিক দলগুলোর বিজয়ী প্রার্থীসহ কীভাবে সরকার গঠিত হবে, সেদিকেও নজর থাকবে সবার।
গত বছর নির্বাচনকে ঘিরেই আলোচনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি, রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কর্মকাণ্ড, ইইউসহ পশ্চিমা বিশ্বের বাংলাদেশ বিষয়ে নানা বিবৃতি ও কর্মতৎপরতা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ভিসানীতি বা পশ্চিমা দেশগুলোর কর্মতৎপরতার বিষয়েও আলোচনা সব জায়গায়। গত বছর সরকার পতনে পদযাত্রা, অবস্থান কর্মসূচি, গণমিছিল ও রোডমার্চ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ছিল বিএনপি। নির্বাচন বর্জন করলেও নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং নির্বাচন-পরবর্তী বিএনপির কর্মতৎপরতা কী হবে, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে।
গত বছর যুদ্ধসহ নানা অজুহাতে দফায় দফায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ মাছ, মাংস, ডিম ও শাকসবজির দাম বাড়ানো হয়েছে। সারা বছরই সক্রিয় ছিল সিন্ডিকেট। দেশের মানুষ নতুন যে সরকারই আসুক তাদের কাছে এ বিষয়ে প্রত্যাশা রাখবে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম হাতের নাগালে থাকে। এছাড়া গত বছরের অর্থনীতি, রিজার্ভ, ডলার, রেমিট্যান্সবিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায়ের প্রত্যাশা সবার।
২০২৩ সালে সারা বছরই চোখ রাঙিয়েছে ডেঙ্গু। প্রিয়জন হারিয়েছেন অনেক মানুষ। কিন্তু মশার প্রজনন ও বিস্তার রোধে সে অর্থে উদ্যোগ দেখা যায়নি। দেশের মানুষ এ বিষয়ে সুরাহা চায়।
সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘাত, লড়াই, সহিংসতা চায় না দেশের মানুষ। সবার প্রত্যাশা-সমুন্নত থাকুক মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনা।
২০২৩ সালে বেশি আলোচনায় ছিল ফিলিস্তিনে ইসরাইলিদের নির্বিচারে মানুষ ও শিশুহত্যা। বিশ্বে যুদ্ধ বন্ধ হয়ে শান্তিময় পরিবেশ বজায় থাকবে-এ চাওয়া পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের।