প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৪৯
জড়িতদের নাম পেয়েছি, দ্রুতই গ্রেফতার: হারুন
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় জড়িতদের নাম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে ডিবি।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, যে কোনো ঘটনার পরে ডিবি সব সময় ছায়াতদন্ত করে। রেলে নাশকতা ও দুর্বৃত্তায়নের কারণে শিশুসহ চারটি তাজা প্রাণ চলে যায়। যারা এ কাজটি করেছে তারা ২৮ তারিখের পর থেকেই নির্বাচনকে ভন্ডুল করার জন্য ও সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্যই করেছে। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি জায়গায় তারা বাসে আগুন লাগাচ্ছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। নতুন করে তারা এখন ট্রেনে আগুন লাগানো শুরু করেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ট্রেনে আগুন লাগানো রাজনৈতিক কোনো পার্ট না। এটা এক ধরনের দুর্বৃত্তায়ন। যারা ট্রেনের বগিতে আগুন লাগিয়েছে তারা ছাড় পাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ডিবি পুলিশ কাজ করছে। অনেকের নাম পেয়েছি, আশা করছি তাদের দ্রুতই গ্রেফতার করা হবে।
নাশকতাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভাড়াটিয়া হিসেবে হোক, আর টাকার লোভে হোক, যারা এই কাজ করছে সেই জায়গা থেকে সরে এসে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করুন। কোনো বড় ভাইয়ের নির্দেশে কাজটি করা মোটেও ঠিক নয়।
হারুন আরও বলেন, আমি মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচন সামনে হবে। সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। কেউ যদি নাশকতা করে, দুর্বৃত্তায়ন করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, এক-দুটা গাড়িতে আগুন লাগালেই কিংবা ককটেল ফুটালেই যে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাবে তা ঠিক নয়। আমরা প্রতিটি জায়গায় কাজ করছি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছি, চেকপোস্ট রয়েছে ও টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, যারা নাশকতা করতে চায় তাদের নাম-নম্বর দিয়ে আমাদের জানাবেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনবো।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ফুটেজগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। গ্রেফতার করে জানানো হবে।
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই আগুনে নিঃশেষ হয়ে যায় চারটি জীবন। নিহতদের মধ্যে এক মা ও তার শিশুসন্তান ছিল।
ঘটনার পর ছায়াতদন্ত শুরু করেছে র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে হরতাল-অবরোধের মধ্যে এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চারটি ট্রেনে আগুন দেওয়া এবং রেললাইন কেটে ফেলার একটি ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আর, সর্বশেষ গত মঙ্গলবার চারজনসহ মারা গেছেন পাঁচজন। রেললাইনে আরও ১৯টি অগ্নিসংযোগ এবং ৮টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।