প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৪২
হিমালয়ের দুর্গম ফার্চামো চূড়ায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের ক্লাব বিএমটিসির দুই অভিযাত্রী এম এ মুহিত এবং কাজী বিপ্লব হিমালয়ের ২০ হাজার ৩০০ ফুট উঁচু দুর্গম চূড়া ‘ফার্চামো’তে সফলভাবে আরোহণ করেছেন।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৯টায় ‘ফার্চামো’এ পর্বতচূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেন। দলের আরেক সদস্য নুরুননাহার নিম্নি অসুস্থতাজনিত কারণে সামিট সম্পন্ন করতে পারেনি।
অভিযানের দলনেতা এম এ মুহিত জানান, ‘২৬ অক্টোবর আমরা রামেছাপ এয়ারপোর্ট থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে বিমানে চড়ি। ওইদিনই আমরা পৌঁছাই এভারেস্ট অঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত হিলারি তেনজিং এয়ারপোর্টে। যেটি একই সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক বিমানরবন্দর হিসেবেও কুখ্যাত। ওইদিন আমরা ট্রেকিং শুরু করি। বিকেলে পৌঁছাই মঞ্জো। ২৭ তারিখ আমরা যাই নামচেবাজার। ২৮ তারিখ ছিল বিশ্রাম। ২৯ তারিখ পৌঁছাই থামে। ৩০ রেস্ট ডে ছিল। ৩১ তারিখ থ্যাংবো। ১ নভেম্বর আমরা ৪ হাজার ৮০০ মিটার উঁচু বেসক্যাম্প পৌঁছাই। ২ তারিখ তারিখ আমরা ৫ হাজার ৭০০ মিটার উঁচু তাশি ফুক হাই ক্যাম্পে যাই। হাইক্যাম্প থেকে ১০০ মিটার নিচে দলের এক সদস্য নিম্নির শরীর খারাপ লাগা শুরু হয়। প্রধান শেরপা দাওয়া তেনজিং তাকে নিয়ে ফিরে যায়।
চিরিং ওয়াংচু শেরপা, ফুর কাঞ্চা শেরপা আমাদের সঙ্গে হাই ক্যাম্পে যাই। হাইক্যাম্প পৌঁছাতে দুপুর হয়ে যায়। দিবাগত রাতে অর্থাৎ তিন নভেম্বর রাত সাড়ে তিনটায় হেড-টর্চের আলোয় আমরা চূড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। আধাঘণ্টা পরে ক্র্যাম্পন পয়েন্টে পৌঁছেছি। ওই সময় তেমন বাতাস ছিল না। মেইন রোপে দেড় ঘণ্টা থাকি। তাশি লাপচা পাসকে ডানে আমরা এগিয়ে যেতে থাকি। দিগন্তে ভোরের লাল আভা দেখার সময় ফিক্সড রোপে আমরা জুমার লাগিয়ে আরোহণ শুরু করি।
তিনটি কঠিন জায়গায় ১০০ মিটার দড়ি লাগানো ছিল। সে জায়গাগুলো ৮০ থেকে ৯০ ডিগ্রি খাড়া ছিল। ছয়টার সময় জুমার শুরু করি যা শেষ হয় সকাল নয়টার দিকে সামিটে পৌঁছে। আমরা উড়িয়ে দিই বাংলাদেশের লাল সবুজ চূড়ায়। পা রাখার আগেই প্রচণ্ড বাতাস শুরু হয়। চূড়ায় ১৫ মিনিটের মতো ছিলাম। মনে হচ্ছিল সব জমে যাবে। হাইক্যাম্পে আসতে আসতে পৌনে এগারোটা বেজে যায়। ওইদিনই বেস-ক্যাম্প হয়ে বিকেল পাঁচটার থ্যাংবো চলে আসি।’
এর আগে বাংলাদেশের পর্বতারোহী দল গত ২৪ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে। ২০ হাজার ৩০০ ফুট উঁচু ‘ফার্চামো’ পর্বতশিখর এভারেস্ট-এর দক্ষিণ-পশ্চিমে নেপালের রোলওয়ালিং হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত। এ অভিযানের দলনেতা এম এ মুহিত দুই বার এভারেস্ট আরোহণ করেছেন। ‘ফার্চামো’ পর্বতশিখর অভিযানটি পরিচালনা করছে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব এবং স্পনসর করছে ইস্পাহানি টি লিমিটেড। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ২০ শতাংশ ছাড়ে অভিযাত্রীদের ঢাকা-কাঠমান্ডু-ঢাকা বিমান টিকিট দিয়েছে।