সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৪৭

‘হরতালের নামে যানচলাচল ব্যাহত করলে কঠোর ব্যবস্থা’

‘হরতালের নামে যানচলাচল ব্যাহত করলে কঠোর ব্যবস্থা’
অনলাইন ডেস্ক

রবিবার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। হরতালের নামে কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন ও সাধারণের যানচলাচলে ব্যাহত করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।

তিনি বলেন, আজ পল্টন ও এর আশপাশ এলাকায় বিএনপিরসহ আরও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ছিল। অনুমতি নেওয়ার সময় বিএনপি নেতারা নিজেরাই উল্লেখ করেন যে, বিজয়নগর থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত তারা এক থেকে এক লাখ বিশ হাজার লোকের জমায়েত করবেন। তাদের সমাবেশে কেউ যেন বাধাগ্রস্ত না করে এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড না চালাতে পারে সেজন্য পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু সকাল ১০টা নাগাদ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী কাকরাইল মোড় ও এর আশপাশে অবস্থান নেয়। তারা এসময় বিনা কারণে বাস ও বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর করে।

‌‘এর কিছুক্ষণ পর তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে অতর্কিত হামলা করে এবং গেট ভেঙে ফেলে। একপর্যায়ে লাঠিসোটা হাতে বাসভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানেও ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশি বাধার মুখে তারা বাসভবন থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তারা পার্শ্ববর্তী সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বাসভবন জাজেস কমপ্লেক্স আক্রমণ চালায় এবং রিসেপশন কক্ষে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এছাড়া জাজেস কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ক্যামেরাসহ আশপাশের পুলিশের শত শত সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে।’

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। দুষ্কৃতকারীরা কাকরাইল মোড় থেকে নাইটেঙ্গেল মোড়ে বেশকিছু যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া আইডিবি ভবনের ভেতরে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে তারা। তারা নাইটেঙ্গেল মোড়ে বাসে অগ্নিসংযোগ করে। লিটলস ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে দুজন পুলিশ সদস্যকে রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে প্রহার করে। দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে তারা ক্ষান্ত হয়। একইসঙ্গে তারা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ চালায়। ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ করার পর একটি আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সসহ ২৬টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। তারা রমনা ট্রাফিক ডিসির অফিসে ভাঙচুর করে এবং অনেকগুলো দোকানে ভাঙচুর চালায়

‘তারা রাজারবাগ পুলিশ লাইন ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ লাইনের ভেতরে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ভাঙচুর চালায়। ধ্বংসযজ্ঞের এক পর্যায়ে তারা বক্সকালভার্ট রোডে একজন পুলিশকে পিটিয়ে চাপাতি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করেও ন্যাক্কারজনকভাবে ওই পুলিশ সদস্যকে লাথি মারতে থাকে। তারা পল্টন থানায়ও আক্রমণ করার চেষ্টা করে।

সহিংসতায় শতাধিক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের যথাযথভাবে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবো। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য ডিএমপি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করবে।

এদিকে সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে রবিবার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

শনিবার সমাবেশ থেকে এ হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজেও এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার নয়াপল্টনে সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের পর হরতালের এ সিদ্ধান্ত এলো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়