সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:০০

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো কথা হয়নি: প্রধানমন্ত্রী

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো কথা হয়নি: প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র সফরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় এক সাংবাদিক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভানের সঙ্গে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। আমার মনে পড়ে না, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। আমাকে কেউ এ ধরনের কথা জিজ্ঞেসও করেনি। ২০০৭-৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, এরপর এটা কেউ চায়? এই পদ্ধতি তো বিএনপি নষ্ট করে দিয়েছে।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলন করে যাচ্ছে, আমরা তো কোনো বাধা দিচ্ছি না। তারা তো আন্দোলন করে যাচ্ছে, লোক সমাগম করে যাচ্ছে, খুব ভালো কথা। এতকাল চুরিচামারি করে যত পয়সা বানিয়েছিল এবং যত টাকা মানিলন্ডারিং হয়েছিল, সেগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত সাধারণ মানুষের কাছে কিছু টাকা তো যাবে। তারা যত আন্দোলন করবে, সাধারণ মানুষের পকেটে কিছু টাকা যাবে। মানুষ কিছুটা টাকা পাক এই দুঃসময়ে, সেটা তো ভালো।

তিনি বলেন, এই টাকাগুলো বের হওয়া দরকার তো। সেই টাকাও বের হচ্ছে, মানুষও কিছু টাকা পাচ্ছে। আমি বলেছি, কিছু বলার দরকার নাই তারা আন্দোলন করতে থাকুক। তবে হ্যাঁ, মানুষের যদি কোনো ক্ষতি করতে চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস ওই ধরনের কিছু করে তখন তো ছাড়ব না। কারণ আমাদের সঙ্গে তো জনগণ আছে, আমাদের কিছু করা লাগবে না। জনগণকে ডাক দিলে তারাই ঠান্ডা করে দেবে। যখন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তখন সাধারণ মানুষই কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল, এবারও তা হবে। তাদের সেট লোক আছে আসে, চলে যায়, খায়-দায়। মানুষ যদি কিছু টাকা পয়সা পায় তাতে ক্ষতি কি। আমি সাংবাদিকদের বলব, তাদের এই টাকার উৎস কি সেটা খবর নেওয়ার দরকার, তারা এত টাকা কোথায় থেকে পায় এবং এত টাকা কীভাবে খরচ করে, সেটার একটু খোঁজ নেওয়া দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, বলেন, সামনে পূজা, আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি এবং করব। আমরা অনুরোধ করেছি পূজামণ্ডপগুলো যেখানে সেখানে না করে, কলকাতায় এত বেশি জনসংখ্যা কয়টা পূজামণ্ডপ হয় সেই হিসেবে তো বাংলাদেশে অনেক বেশি হয়। তারপরও আমাদের স্থানীয় জনগণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই সচেতন আছে এটার নিরাপত্তার দেওয়ার জন্য। বিএনপির আমলের অত্যাচার থেকে হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কেউ বাদ যায়নি। আবার সেটা যেন না করতে পারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সবাইকে সচেতন থাকতে পারে।

সরকারপ্রধান বলেন, তারা যদি দুর্গাপূজার দিকে কোনো দৃষ্টিই না দেয় তারপরও যদি আন্দোলন করতে থাকে, তারা তো তারিখ দিয়েই যাচ্ছে অমুক তারিখ ফেলে দিবে, তমুক তারিখ ফেলে দিবে। দিতে থাক অসুবিধা নাই, আমি এটাতে মাইন্ড করছি না। আমি মনে করি ভালো। আন্দোলনটা থাকলে মানুষ বেশ গরম থাকে, আমার পার্টিও ভালো থাকে, তখন আবার তারা নেমে পড়ে। মাঝে একটু ডিল দিয়েছিল কেউ নাই বলে, এখন এমপি সাহেবরাও দৌড়াচ্ছে এলাকায়, এখন সবাই দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। যার যার পজিশন ভাটায় টান দিয়েছিল, এখন দেখি তারা ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে পূজার সময় যেন কোনো অপকর্ম না করতে পারে, সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

তাদের মিথ্যা কথায় কেউ কান দেবেন না

বিএনপি বলছে, আপনি আপনি খালি হাতে ফেরত এসেছেন– এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলেছে আমি খালি হাতে আছি এইতো? আমি কোনো উত্তর দিতে চাই না। আমি শুধু দেশবাসীকে বলতে চাই, বিএনপি নেতারা মাইক লাগিয়ে কী হারে মিথ্যা কথা বলে,সেটি আপনারা জেনে নেন। মিথ্যা বলা তাদের অভ্যাস। তাদের সবকিছুকেই খাটো করে দেখার চেষ্টা থাকে। এটার বিষয়ে দেশবাসী যেন একটু সচেতন থাকে। তাদের মিথ্যা কথায় কেউ কান দেবেন না। মিথ্যা কথা কেউ বিশ্বাস করবেন না। এটাই আমার আহ্বান।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি তো মাইক একটা লাগিয়েই রাখে। বলে আমাদের কথা বলতে দেয় না। আমরা নাকি তাদের মিছিল মিটিং করতে দিই না। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, বেশি দূর যাওয়ার কথা নয়, ২০০১–এ থাকতে আমাদের সাথে কী আচরণটা করত। আমাদের নেতাকর্মী এখানে অনেকেই আছে, ধরে নিয়ে যেভাবে দিনের পর দিন তাদের ওপর টর্চার (নির্যাতন) করেছে, অত্যাচার করেছে, আমরা যদি তার একটা কণাও করতাম, তবে ওদের অস্তিত্বই থাকত না। আমরা তো ওদের খুলে দিয়েছি, যা খুশি করো। নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করে আসো।

তিনি বলেন, অবশ্যই প্রতিযোগিতা থাকতে হবে, বিরোধী দল থাকতে হবে। কিন্তু বিরোধী দল কে? পার্লামেন্টে একটা সিট নাই। বিরোধী দল হিসাব করে তো রাখা যায় না। যার নির্বাচন করার মতো সাহস নেই। নির্বাচন করে পার্লামেন্টে আসতে পারে না। তারা আবার বিরোধীদল কীসের? গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংসদে যাদের আসন আছে, তারাই বিরোধী দল। রাস্তায় কে ঘেউ ঘেউ করে বেড়াল, সেটাকে বিদেশে কখনো বিরোধী দল হিসেবে ধরে না। এটা সবার মনে রাখা উচিত।

প্রার্থী মনোনয়নে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদের বিবেচনা করব

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন কোন বিবেচনায় দেওয়া হবে– এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, সেটাই আমরা বিবেচনায় দেখব, বিবেচনা করব। প্রতি ছয় মাস পর পর আমি কিন্তু সার্ভে করি। কারো পজিশন খারাপ হলে সরাসরি মুখের ওপর বলে দিই। আমরা প্রপার সচেতন বলে নির্বাচনে জনগণের আস্থা পাই, ভোট পাই এবং নির্বাচনে জয়ী হই।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের কাছে কার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, যারা সংসদ সদস্য আছেন তারা কতটুকু জনগণের জন্য কাজ করেছেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস কতটুকু অর্জন করেছেন, আমরা সেটাকেই বিবেচনা নিই। সেটা বিবেচনায় নিই বলে আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে পারি। আমাদের সংসদ সদস্য, মন্ত্রীরা যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ না করত, তাহলে বাংলাদেশের এত পরিবর্তন হতো না।

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও মহলের মন্তব্য প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন,অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তো আমিই বলেছি। আমরা আব্রাহাম লিংকনের যেটা জানি, গভর্মেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল– এটা তো আমরাই এস্টাবলিশড করেছি। গভর্নমেন্ট ফর দ্য আর্মি, বাই দ্য আর্মি থেকে তো আমরাই রেহাই দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীসহ কত মানুষকে হত্যা করেছে। বিমানবাহিনীর কত অফিসারকে হত্যা করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর কি অকথ্য নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। যারা স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, মানিলন্ডারিং ও যত কর্ম-অপকর্ম বাংলাদেশে ছিল সেগুলো থেকে মুক্ত করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সেশন জট ছিল, সেটা থেকে আমরা উদ্ধার করেছি। এসব করে যখন একটা নিয়মতান্ত্রিক দেশ পরিচালনা করছি এবং দেশটা যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলেছে, তখন হঠাৎ অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সবার এত মাতামাতি কেন– সন্দেহ হয় রে। এটাই বলতে হয়, সন্দেহ হয় রে।

রিজার্ভ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে বেশি কথা বললে, সব বন্ধ করে বসে থাকবো। ভোটে আসলে আবার করব। দেখি কে দায়িত্ব নিতে রাজি হয়। সব রেডি করে দিয়েছি, এখন বসে বসে বড় বড় কথা বলে। আমি বাবা-মা সব হারিয়েছি। আমার হারাবার কিছু নেই। ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে মিছিল করি। কত বছর হয়েছে রাজনীতির? একটা স্বপ্ন ছিল জাতির পিতার, সেটা করেছি, এখন তো কেউ না খেয়ে থাকে না।

তিনি বলেন, মানুষ যদি বলে রিজার্ভ রক্ষা করতে হবে, তাহলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিই, সার বন্ধ করে দিই, সব বন্ধ করে বসে থাকি, রিজার্ভ ভালো থাকবে। রিজার্ভ বেশি রাখা প্রয়োজন, না কি দেশে মানুষের ভালো ভাবে রাখা প্রয়োজন, কোনটা?

সরকারপ্রধান বলেন, করোনার সময় আমাদের আমদানি বন্ধ ছিল, রপ্তানি বন্ধ ছিল, যোগাযোগ বন্ধ ছিল, যাতায়াত বন্ধ ছিল, সব কিছু বন্ধ ছিল। যার জন্য আমাদের রিজার্ভ বেড়ে ছিল। এরপর যখন সব কিছু খুলে গেল, আমাদের আমদানি করতে হলো, তখন আমাদের রিজার্ভ কমবে, এটাই তো স্বাভাবিক ব্যাপার। আমার প্রশ্ন হচ্ছে– আমি যখন ২০০৯ ক্ষমতা গ্রহণ করি তখন রিজার্ভ কত ছিল? ১ বিলিয়নও ছিল না। ০.৭৭ রিজার্ভ ছিল। আমি যখন ৯৬ সালে সরকার করে রিজার্ভ কত ছিল? বিলিয়নের ধারে কাছেও ছিল না। যতটুকু বেড়েছে, আমাদের সরকারের আমলে আমরা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০ ডলারের গম ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে। ৮০০ ডলারের পরিবহন খরচ এখন তিন হাজার, চার হাজার ডলার লাগছে, তারপরও তো পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছি, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। আমরা নিজেরা উৎপাদন করব, নিজেরা খাব, নিজেরা চলব।

বিদ্যুতে ভর্তুকির সুযোগ নিচ্ছে বিত্তশালীরা

বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, সবাই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। আর ভর্তুকির সুযোগটা নিচ্ছে অর্থশালী বড়লোকরা। একটা স্লট ঠিক করে সাধারণ মানুষ কতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাদের জন্য এক দাম নির্ধারণ করা হবে। আর এর থেকে বেশি যারা ব্যবহার করবে তাদের জন্য আলাদা দাম নির্ধারণ করা হবে।

তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি, কয়টা স্লট করে করে দাম নির্ধারণ করা হবে। যে বেশি ব্যবহার করবে তাকে বেশি দামে কিনতে হবে। এটা নিয়ে কাজ চলছে। আমরা এভাবে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে দেব।

যাদের স্যাংশন দেবে, তাদের কাছেই নিরাপত্তা চাইবে

নিরাপত্তা হুমকি নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা সংস্থার ওপর স্যাংশন দেবে, আবার তাদের কাছ থেকে নিরাপত্তা চাইবে— এটা কেমন কথা।

তিনি বলেন, আমেরিকায় যিনি অ্যাম্বাসেডর আছেন, তাকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম— আমেরিকা সরকার থেকে আমার অ্যাম্বাসেডরকে কি ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তিনি বললেন- শুধু আমাদের এম্বাসিতে তারা কিছু নিরাপত্তা দেয়। তখন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন— আমরা তো আমেরিকা এম্বাসিতে নিরাপত্তার জন্য ১৫৮ জন পুলিশকে ডিপ্লয় করেছি এবং এখানে যে অ্যাম্বাসেডর আছে তার জন্য গানম্যান দেওয়া আছে সিভিল ড্রেসে। কাজেই এখানে তার নিরাপত্তার তো এমন কোনো ঘাটতি নেই।

গণমাধ্যমের ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মিডিয়ার মালিকদের উদ্দেশে বলেন, শুধু নিজেরা পয়সা কামালে হবে না, যাদেরকে দিয়ে কাজ করাবেন তাদের (সাংবাদিকদের) ভালো-মন্দ তো দেখতে হবে। ওয়েজবোর্ড আমরা দিয়েছি, এটা কার্যকর করার দায়িত্ব মালিকদের।

তিনি বলেন, মালিকদের আবার কমিটি আছে, তারা আবার সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু মেসেজ দেওয়ার আমরা দেব। এখানে মালিকদের যা করার তা করা উচিত।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন হতে হবে

ডেঙ্গু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এখানে শুধু এমপি সাহেব ও ডাক্তার সাহেবদের দাঁড় করিয়ে দিলে হবে না। এখানে নিজেদের সচেতন হতে হবে। নিজের ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখা, মশা কোথায় জন্মাচ্ছে সেটা দেখতে হবে। মশার প্রজনন ক্ষেত্র যেন তৈরি না হতে পারে এ ব্যাপারে সবার দায়িত্ব থাকতে হবে। সরকারের পক্ষে থেকে এ বিষয়ে প্রচেষ্টা আছে এবং প্রচেষ্টা চলবে। এ ব্যাপারে গবেষণাও চলছে, ইতোমধ্যে শুনলাম জাপান না কি টিকা আবিষ্কার করেছে। এগুলো তো আসলে সময়সাপেক্ষ।

তিনি বলেন, আমি দেশবাসীকে বলব সবাই নিজের ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখুন এবং মশারি টানিয়ে ঘুমান। এখন তো ফ্যাশন হয়ে গেছে... কেউ মশারি টানায় না। অথচ মশারি টানানো একান্ত দরকার। ওষুধ দিতে দিতে মশাও চালাক হয়ে যায়, সেও ওষুধ সহ্য করে ফেলে। সেজন্য সবারই মশারি টানানো উচিত। এছাড়া ঘর-বাড়ি ও ছাদসহ আশপাশের এলাকায় যেন পানি জমে না থাকে, সে বিষয়ে সবাই যদি এলাকাভিত্তিক উদ্যোগ নেয়, তাহলে কিন্তু ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যেটুকু করার আমরা সেটি সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া, চিকিৎসার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া... যা যা দরকার সেটি আমরা করছি।

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট সচেতন। বারবার টেলিভিশনসহ সব জায়গায় বলা হচ্ছে, সারাক্ষণ কিন্তু আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। এখন মানুষ কতটুকু সচেতন হয় সেটি হলো কথা। কোনো একটা জিনিস পরে থাকলে সেখানে গিয়ে মশা জমা হয়, পানি থাকলেও মশা জমা হয়। আসলে জাতিগতভাবে আমাদের একটু নিজেদের সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। এটা খুবই দুঃখজনক এভাবে ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার সেটি আমরা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়