প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:১১
লিবিয়ার বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার তাণ্ডবে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় মানবিক সহায়তা হিসেবে দ্রুততার সাথে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের জনগণের জন্য বিশ্ব দরবারের প্রতি লিবিয়ার রাষ্ট্রপতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ঝড়ের আঘাতে এবং সৃষ্ট বন্যায় ৫ হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের সি-১৩০ এয়ারক্রাফট শিগগিরই ঢাকা থেকে যাত্রা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ঔষধ, শুকনো খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হবে। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের দুর্গত জনগণের জন্য এই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। লিবিয়ার তাবরুক এয়ারপোর্টে লিবিয়া সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো ত্রাণসমূহ গ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে আসছে।
এদিকে, লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেরনা শহরের দুটি বাঁধ বন্যার স্রোতে ভেঙে যাওয়ার পর এই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এসময় সেখানকার পুরো সম্প্রদায় সাগরে ভেসে যায় বলেও জানানো হয়।
পূর্বাঞ্চলীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ আল-মোসমারি বলেন, দেরনায় বাঁধ ভেঙে শহরের ভেতরে পানি প্রবেশ করে। তিনটি সেতু সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে। আশপাশের এলাকাগুলোতে পানি ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানকার বাসিন্দারা সমুদ্রে ভেসে যায়। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল ও দোকানপাট। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল বেনগাজি, দেরনা ও আল-মার্জ।
রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে পূর্বাঞ্চলের বন্যা ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছে লিবিয়ার অন্তর্বতী সরকার। এদিকে, তিন দিনের শোক ঘোষণা ঘোষণা করেছে দেশটির পূর্বাঞ্চল-ভিত্তিক সরকার।
লিবিয়ায় জাতিসংঘের অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। এসময় জরুরি ত্রাণ সহায়তার দেয়ার আশ্বাসও দেয়া হয়।
গত সপ্তাহে গ্রিসে আছড়ে পড়ার পর রোববার লিবিয়ায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। এসময় ভারী বৃষ্টিতে দেশটির পূর্বাঞ্চলে দেখা দেয় ভয়াবহ বন্যা। প্লাবিত হয় রাজধানী ত্রিপোলিসহ উপকূলীয় শহরের রাস্তা-ঘাট ও বাড়িঘর। ভেঙে পড়ে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি।
লিবিয়া বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ পূর্ব দিকে, অন্যপক্ষ পশ্চিম দিকের অঞ্চলগুলো শাসন করছে। এ অবস্থায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।