প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০৬:৫৩
পানির ব্যবসায় যুক্ত হতে গিয়ে খুন যুবলীগ নেতা রুবেল
রাজধানীর শাহজাহানপুর গুলবাগে যুবলীগ নেতা অলিউল্লাহ রুবেলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, পানির ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন যুবলীগ নেতা রুবেল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে শাহজালাল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার শত্রুতা তৈরি হয়। উচিত শিক্ষা দিতে যুবলীগ নেতা রুবেলকে হত্যা করা হয়।
শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন আদনান আসিফ ও মো. শাকিল।
রবিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, হত্যার শিকার অলিউল্লাহ রুবেল রাজধানীর শাহজাহানপুরে পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। শান্তিবাগ এলাকায় ইন্টারনেট ও ডিমের পাইকারি ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি ওই এলাকায় পানির ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন। মূলত এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে শাহজালালের সঙ্গে তার শত্রুতা তৈরি হয়।
এই শত্রুতার কারণে ঘটনার একদিন আগে মালিবাগ পিডব্লিউডি সরকারি কলোনির মাঠে শাহজালালের নির্দেশে হাবিব, সানি, আলিফ, শাকিল, আসিফ এবং আরও কয়েকজন মিলে রুবেলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন (২০ জুলাই) রাত ১১টার দিকে রুবেল বাসায় ফেরার পথে তার গলির মুখে অবস্থান নেয় গ্রেফতার আসিফ এবং শাকিল। সেখান থেকে আর একটু সামনে একই গ্রুপের অন্যান্য সদস্য হাবিব, সানি, আলিফসহ অন্যরা রুবেলকে মারার জন্য দেশি ধারালো অস্ত্রসহকারে অবস্থান নিয়ে অপেক্ষা করছিল। গ্রেফতার শাকিল এবং আসিফ রুবেলকে হত্যার জন্য অপেক্ষায় থাকা হাবিবকে প্রতিনিয়ত রুবেলের অবস্থানের আপডেট দিতে থাকে।
এরপর রুবেল সামনে এগিয়ে গেলে সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান নেওয়া হাবিব তার দলবল নিয়ে দেশি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রুবেলের ওপর আক্রমণের চেষ্টা চালায়। তখন রুবেল বাঁচার জন্য দৌড়াতে শুরু করেন এবং হাবিব ও অন্যরাও তার পেছনে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে।
র্যাব-৩ অধিনায়ক আরও জানান, কিছু দূর দৌড়ে আসার পর ঘটনার দিন রাত ১২টা ৪০ মিনিটে শাহজাহানপুর থানাধীন ১৫৬ মালিবাগ বাজার রোড বিভাবরী বাড়ির সামনে এসে হাবিব ও তার দল রুবেলকে ধরে ফেলে এবং তাকে রাস্তায় ফেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এলোপাতাড়ি মাথা, দুই হাত, পা, পিঠসহ সারা শরীরে কোপাতে থাকে।
এ অবস্থায়ও বাঁচার জন্য রুবেল রক্তাক্ত শরীর নিয়েই মালিবাগ সরলতা ভবনের সামনে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গ্রেফতার দুইজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, মূল পরিকল্পনাকারী শাহজালালের পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। শাহজালালের সঙ্গে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রুবেলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এতে শাহজালাল ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেলকে হত্যার জন্য হাবিবকে দায়িত্ব দেয়। এরই জের ধরে হত্যাকারীরা রুবেলকে হত্যার নীলনকশা সাজায় এবং সেই অনুযায়ী নৃশংসভাবে হত্যা করে।
র্যাব বলছে, শাকিল ও আসিফ ঘটনাস্থলে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের পর দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে নিজ নিজ বাসায় চলে যায়। শাকিল ও আসিফ পরদিন টঙ্গীতে শাকিলের এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে গা-ঢাকা দেয় এবং অন্যান্যরা কুমিল্লার দিকে পালিয়ে যায়।