প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ০১:৪১
জাতীয় ঈদগাহ মাঠের ৮০ শতাংশ প্রস্তুত, চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ
পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র দুদিন বাকি। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। ঈদের প্রধান জামাত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকলে ঈদগাহের বদলে আধাঘণ্টা পিছিয়ে সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের প্রধান জামাতকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ প্রস্তুতি হিসেবে ময়দানে লাইট, ফ্যান ও সীমানাঘেঁষে সাদা কাপড় টাঙানোর কাজ চলছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাঠের প্রস্তুতি প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ। মাঠের চারপাশে সাদা কাপড় টাঙানো শেষ হলেই চট/মেট বিছানো শুরু হবে। মাইক, বিদ্যুৎ সংযোগ, ফ্যান ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজও চলছে সমানতালে। এর মধ্যদিয়ে শেষ হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সাজসজ্জার কাজ। সাধারণ অজুখানার পাশাপাশি নারী ও ভিআইপিদের জন্য পৃথক অজুখানার ব্যবস্থা থাকবে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার (২৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঈদ জামাত আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
জানা গেছে, মাঠে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য নারী-পুরুষের আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে নামাজ ও মোনাজাত শেষে মুসল্লিদের বের হওয়ার পর্যাপ্ত পথ রাখা হয়েছে। বৃষ্টি ও রোদ থেকে মুসল্লিদের রক্ষায় ত্রিপল টাঙানো হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে রাস্তার ওপর তৈরি করা হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার।
সোমবার (২৬ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিবি, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বসার স্থান প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে সিসিটিভি ও কন্ট্রোল রুম। মাঠের ভেতর ও বাইরে বাঁশের সঙ্গে সাদা কাপড় মোড়ানো এবং ফ্যান টাঙানোর কাজ করছেন কর্মীরা। প্রধান গেটসহ আশপাশের সাজসজ্জায় ব্যবহৃত কাঠামোগুলোতে রং করা হয়েছে।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের জামাত ঘিরে আগত মুসল্লিদের জন্য সিলিং ফ্যান লাগানোর কাজ চলছে। ফ্যানগুলো লাগানো হলে নামাজের কাতারের সামনে ও পেছনের দিকে স্ট্যান্ডফ্যান বসানো হবে। পানিরোধক সামিয়ানা দিয়ে ছাউনি প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন ভেতরে নামাজের জায়গা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করার কাজ হবে মাঠের ভেতরের অংশে। এরপর শেষ সময়ে ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে শেষ করা হবে সাজসজ্জার কাজ। স্থাপন করা হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেম। মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ঈদগাহ ময়দানের ভেতরসহ পুরো ঈদগাহজুড়ে নিরাপত্তার জন্য স্থাপন হচ্ছে সিসি ক্যামেরা।
২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। এবার ঈদগাহে প্রবেশের জন্য ভিআইপি গেট থাকছে একটি। পাশাপাশি জনসাধারণের জন্য একটি ও নারীদের একটি গেট রাখা হয়েছে।
এছাড়া ঈদ জামাতে ঈদগাহ ময়দানে ভিআইপি পুরুষ কাতার থাকবে পাঁচটি এবং নারী কাতার থাকবে একটি। আর জনসাধারণের জন্য পুরুষ কাতার থাকবে ৬৫টি (বড় আকারের) আর ৫০টি (ছোট আকারের) নারী কাতার থাকবে। সেইসঙ্গে অজুখানায় একসঙ্গে প্রায় ১১৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন নারী পৃথক স্থানে অজু করতে পারবেন।
জানা গেছে, গরমের কথা বিবেচনায় জাতীয় ঈদগাহে ১০টিরও বেশি এয়ার কুলার ছাড়া পর্যাপ্ত ফ্যান ও লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে খাবার পানি, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র ও ভ্রাম্যমাণ টয়লেটসহ বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা।
ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, বলতে পারেন ঈদগাহ ময়দান প্রায় প্রস্তুত। এখন শুধু নিচে কার্পেটিং এবং সাদা চাদর বিছানোর কাজটুকু বাকি। তাছাড়া সব কাজই আমাদের প্রায় শেষ দিকে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্য কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, আমাদের কার্যক্রম প্রায় শেষের পথে। আপনারা দেখেছেন ঈদগাহ মাঠের সাজসজ্জার কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ডিএসসিসি মেয়র সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবেন। যেগুলো বর্জ্য অপসারণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মশক নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম চলমান। আশাকরি, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হবে।
জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহ মাঠসহ আশপাশে প্রায় এক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। এছাড়া জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি নামাজ আদায়ে নারীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে।