শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৩, ০১:০৬

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপে বাড়ে স্ট্রোক-হৃদরোগের ঝুঁকি

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপে বাড়ে স্ট্রোক-হৃদরোগের ঝুঁকি
অনলাইন ডেস্ক

অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু এর প্রভাবে নীরবে ক্ষতি হতে থাকে বিভিন্ন অঙ্গের। এ জন্য এটিকে বলা যায় নীরব ঘাতক।

উচ্চ রক্তচাপের কারণ: শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কারণ অজানা। হরমোন ঘটিত কিছু রোগব্যাধি, কিডনির রোগ, গর্ভকালীন অবস্থা, স্টেরয়েড এবং অন্যান্য কিছু ওষুধ শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ রক্তচাপের জন্য দায়ী। বয়স, স্থূলতা, অতিরিক্ত চর্বি ও লবণ জাতীয় খাবার, ধূমপান, অ্যালকোহল, বংশগত ধারা, আয়েশি যাপিত জীবন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান ঝুঁকি।

লক্ষণ ও ক্ষতিকর প্রভাব: উচ্চ রক্তচাপের কারণে মাথা-ঘাড় ব্যথা, নাক থেকে রক্তক্ষরণ, ঝাপসা দৃষ্টি, বুক ধড়ফড় ইত্যাদি লক্ষণ‌ দেখা দেয়। রক্তচাপ খুব বেড়ে গেলে বমি, বুকে ব্যথা, অস্থিরতা, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। হার্ট ফেইলোরের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে রক্তচাপ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্তর রেটিনার ক্ষতি করে। কিডনি ফেইলোরের পেছনে উচ্চ রক্তচাপ অনেকাংশে দায়ী।

রক্তচাপ নির্ণয়: হৃদপিণ্ড সংকোচন ও প্রসারণের সময় রক্তনালিতে যে চাপ অনুভূত হয় সেটা হলো যথাক্রমে সিস্টোলিক ও ডায়াস্টলিক রক্তচাপ। এটি ১৪০ এবং ৯০ মি মি পারদের বেশি হলে তাকে বলা হয় উচ্চ রক্তচাপ। ঘরে বসেই রক্তচাপ মাপক যন্ত্রের সাহায্যে যে কেউ এটি নির্ণয় করতে পারেন। তবে অনেকেই সঠিকভাবে রক্তচাপ পরিমাপ করতে পারেন না। সে জন্য অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে এটি নির্ণয়ের পদ্ধতি জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

করণীয়: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য যাপিত জীবনের মাঝে আনতে হবে পরিবর্তন। লবণ গ্রহণ সীমিত করতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণে সংযত হতে হবে। শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝেঁটে বিদায় করতে হবে। খাদ্য তালিকায় স্থান দিতে হবে শাকসবজি, বাদাম, ফলমূল ইত্যাদি। নিয়মিত শরীরচর্চার ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ১৫০ মিনিট জোর কদমে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য প্রার্থনা, মেডিটেশন, ইয়োগা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বাইরে ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি করা যেতে পারে। ঘুমাতে হবে প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। ধূমপান এবং অ্যালকোহল সম্পূর্ণ বর্জন করতে হবে। এর পাশাপাশি অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ শুরু করতে হবে।

লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়