প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২২, ২৩:৩১
কমছে পুরুষের শুক্রাণু, হুমকিতে সন্তান জন্মদান!
ভাবুন তো, হঠাৎ বিশ্বজুড়ে সব পুরুষের শুক্রানু ফুরিয়ে গেছে। জন্ম নিচ্ছে না নতুন কোনো সন্তান। একটা সময় মানবশূন্য হয়ে গেলো পুরো বিশ্ব। আশ্চর্য লাগছে, তাই না?
পড়তে আশ্চর্য লাগলেও, এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করে গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক হিউম্যান রিপ্রোডাকশন আপডেট নামের একটি সাময়িকী।
নিবন্ধটিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে পুরুষের শুক্রাণুর হার অর্ধেকের বেশি কমেছে। শুক্রাণুর হার কমা রোধ করা ঠেকানো না গেলে সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে সংকটে পড়বে মানবজাতি।
নিজেদের শুক্রাণু উৎপাদনক্ষমতার বিষয়ে সচেতন নন, এমন ১৫৩ জন পুরুষের শুক্রাণু নিয়ে এ গবেষণা করা হয়। তাতে উঠে আসে, ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে শুক্রাণুর ঘনত্ব গড়ে ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। তাছাড়া এ ৪৫ বছর সময়ের মধ্যে বীর্যে শুক্রাণুর হার কমেছে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা যা, ১৯৭২ সাল থেকে সব মহাদেশে শুক্রাণু উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার হার বাড়তে থাকে। গবেষকরা দেখতে পান, ওই সময় থেকে প্রতিবছর ১ দশমিক ১৬ শতাংশ করে শুক্রাণুর হার কমেছে। তবে ২০০০ সালের পর থেকে পুরুষের শুক্রাণুর হার প্রতিবছর গড়ে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ হারে গড়ে কমেছে।
গবেষণা নিবন্ধটির অন্যতম লেখক জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাগাই লেভিন বলেন, আমার মতে, পুরুষের শুক্রানু কমে যাওয়ার বিষয়টি ইজ্ঞিত দেয় যে, বিশ্ব ভুল পথে আছে। এটা নিয়ে এখনই আমাদের সচেতন হতে হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই সমস্যাটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
এদিকে, এ গবেষণার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে বলে মনে করেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এখানে পুরুষের বয়স, বীর্যপাত না হওয়ার সময়সীমা, শুক্রাণু উৎপাদনের ক্ষমতা কম থাকার মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হলেও, শুক্রাণুর মান যাচাইয়ের বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান, মদ্যপান, স্থূলতা ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার না খাওয়ায় পুরুষের শুক্রাণুর হার কমতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুক্রাণুর উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
২০১৭ সালে একই রকম একটি গবেষণা শুধু ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল। তখন গবেষকরা বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন। তবে এবার গবেষকেরা ৫৩টি দেশের পুরুষদের শুক্রাণু নিয়ে গবেষণা করেছেন।
ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোর পুরুষদের বীর্যে শুক্রাণু কমে যাওয়ার বিষয়টি এবারের গবেষণায় উঠে এসেছে।