প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:৫৩
রাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ, আটক ১৩ শতাধিক
ইউক্রেনে নতুন করে সেনা পাঠাতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো ‘সামরিক সংহতিকরণ’ বা সামরিক বাহিনীর সেনাসংখ্যা বাড়াতে সেনা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন পুতিন। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর জন্যও পুতিন বাড়তি অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুতিনের এই ঘোষণায় প্রমাদ গুনছে পশ্চিমা বিশ্ব। আশঙ্কা করা হচ্ছে পুতিন হয়তো সেনা সংখ্যা বাড়িয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ আরো জোরদার করতে পারেন। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন।
পুতিনের এই ঘোষণায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে রাশিয়ায়ও। দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভে নামেন হাজার হাজার মানুষ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় ১৩ শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকেই আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ৫ শতাধিক নাগরিককে। পুলিশ জানায়, আইন অমান্য করে জনবিক্ষোভ গড়ে তোলার অপরাধে তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত।
বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট বিপুল সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেন। এতে জরুরি ভিত্তিতে অন্তত ৩ লাখের বেশি রিজার্ভ সেনাকে ডাকা হচ্ছে বলে জানানো হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম এমন সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে রাশিয়া। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন পুতিন।
সম্প্রতি ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরোধের মুখে পিছু হঠতে বাধ্য হচ্ছে রুশ বাহিনী। এরপরই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের কথা জানায় মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার এ সেনা সমাবেশকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ইউক্রেনে রাশিয়ার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিরাট অঞ্চলে মস্কো অনুগত নেতাদের ডাকা গণভোটের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন জানালেন পুতিন। ওই গণভোট ডাকার পরদিনই তিনি রিজার্ভ সেনাদের ডাকার নির্দেশ দিলেন।
পুতিনের এ ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু করেন যুদ্ধবিরোধী রুশ নাগরিকেরা। মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গ ছাড়াও বিক্ষোভ হয়েছে সাইবেরিয়ার ইরকুতস্ক শহর ও ইয়েকাতেরিনবার্গ মতো শহরগুলোতে।
এ দিকে পুতিনের এমন ঘোষণার পর রাশিয়া থেকে ছাড়া বিমানের টিকিট বিক্রি বেড়ে গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়। রাশিয়ার নাগরিকরা ভয়ে দেশ ছাড়ছেন।
বুধবার মস্কোর প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, রাস্তায় যেকোনো অনুমোদনহীন প্রতিবাদে আহ্বান ও অংশগ্রহণের জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এ ধরনের প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে অসম্মান করা, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান সম্পর্কে ভুয়া খবর ছড়ানো বা অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতিবাদ করতে উৎসাহিত করার বিরুদ্ধে আইনের আওতায় বিচার করা হতে পারে।