মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৭

তালেবান শাসনে বেকার ৪০০০ নারী পুলিশ

তালেবান শাসনে বেকার ৪০০০ নারী পুলিশ
অনলাইন ডেস্ক

আফগানিস্তানে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে গোঁড়ামি। ১৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মেয়াদে কাবুল দখলের পর পূর্বের মতো কট্টর না হবার আশ্বাস দিলেও, বাস্তবে তার উল্টো চিত্র। আবার জেঁকে বসেছে কট্টর তালেবান রাজ। মেয়েদের পড়ালেখা থেকে নারীদের কর্মস্থল সবখানেই ফতোয়া-নিষেধাজ্ঞা। বাদ পড়েনি সরকারি চাকরিজীরী নারীরাও। এর রেশ ধরেই, পুলিশ থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছেন প্রায় চার হাজার নারী।

গার্ডিয়ানে দেওয়া আফগান পুলিশের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গুলফারোজ ইবতেখারের এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য উঠে এসেছে। তালেবানের ভয়ে সিআইডির পরিবার প্রতিক্রিয়া বিভাগের সাবেক ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গুলফারোজ এখন আলবেনিয়ায়।

দেশের বাইরে থেকেই আফগানি নারীদের জন্য কাজ করে যেতে চান তিনি। তিনি বলেন, পুলিশের নারী সদস্যরা আমাদের দেশের সম্পদ। তাদের কাজ করতে না দেওয়াটা একদমই ফলপ্রসূ নয়। তারা সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং অভিজ্ঞ। তালেবানদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন শাসনের কারণে বিফলে যাচ্ছে তাদের মেধা। তালেবানরা প্রায় ৪০০০ মহিলা পুলিশ সদস্যের মধ্যে অল্পসংখ্যক সদস্যকে মহিলা কারাগার চালানোর জন্য রেখে বাকিদের চাকরিচ্যুত করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন নারীকল্যাণ সংস্থা বিলোপ করেছে তালেবান সরকার।

আফগান শাসনের পুনরাবৃত্তির সে দিনগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তালেবানরা আসছে শুনে সবাই তড়িঘড়ি করে চলে গেলেও, আমি পারিনি, আমার দায়িত্ব ফেলে রেখে যেতে।’ তার পরিচালিত বহু মামলার অভিযুক্ত আসামি ছিল

বিভিন্ন তালেবান সদস্য। তালেবান যে তার ওপর প্রতিশোধ নেবে, সেটা ভালো করে জেনেও, পিছু হটেননি তিনি। প্রায় ১২ বছরের কর্মজীবন। লিঙ্গ বৈষম্যভিত্তিক সহিংসতা ছিল তার তত্ত্বাবধানে থাকা বিভাগের একাংশ। বেশির ভাগ মামলাই আসত তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে। ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মাঝে প্রায় ১২ হাজার মামলায় কাজ করেন ইবতেখার। ‘এই সংখ্যাটা খুব চোখে লাগে কারণ, বেশির ভাগ আফগান নারীই গৃহনির্যাতনের মামলা করেন না।’ সেদিন কাজ শেষে বাসায় গেলে জানতে পারেন ইতোমধ্যেই তার বাসায় এসে ‘দেখে নেব’মূলক হুমকি দিয়ে গেছে বর্বর তালেবানের কজন সৈন্য।

‘আফগানিস্তানে পুলিশের খ্যাতি নেই বললেই চলে। দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি, যেসব নারী এই পেশায় আছেন তাদের নৈতিকতাকে প্রশ্ন করার পাশাপাশি বাঁকা দেখা হতো চোখেও।’ আমি যখন প্রথম কাজ শুরু করি, আমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন আমার পরিবারকে বলেছিল যে আমি একটা মন্দ পেশা বেছে নিয়েছি। আমার কপালে তাই জুটবে না ভালো স্বামী-হাসতে হাসতে বলেন গুলফারোজভ। ‘পুলিশে কাজ করতে এসে বুঝতে পারি, এখানে কর্মরত নারী সদস্যদের পেশাদারীকরণ করানো জরুরি ছিল’। ‘বেশির ভাগ নারী সদস্যই তাদের অধিকার সম্বন্ধে অজ্ঞাত থাকায়, তাদের অনেক হেনস্তার শিকার হতে হতো। তাই আমি আমার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের কাছে নারী সদস্যের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং উচ্চতর পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে বলি’।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়