শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ৩১ °সে

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৪০

১০ দফা নিয়ে ৮ দিন ধরে অনশনে জুনিয়র চিকিৎসকরা

১০ দফা নিয়ে ৮ দিন ধরে অনশনে জুনিয়র চিকিৎসকরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুই মাস আগে আর জি কর হাসপাতালে এক জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার পর সেই ঘটনায় বিচারের দাবিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকতায় বেগবান হওয়া অভূতপূর্ব আন্দোলন এখনও চলছে। চলমান দুর্গাপূজার মধ্যেও আন্দোলনের চেতনা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।

গত ৯ আগস্ট ৩১ বছর বয়সের এক জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই কলকাতা জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। একপর্যায়ে ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার, কর্মক্ষেত্রে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য সেবা কাঠামোর সংস্কার, কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে গত ৪ অক্টোবর কলকাতার ধর্মতলা এলাকার অনশনমঞ্চে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সাতজন চিকিৎসক এই কর্মসূচিতে যোগ দেন।

অনশনরত ৭ চিকিৎসক হলেন- স্নিগ্ধা হাজরা, তনয়া পাঁজা, অনিকেত মাহাতো, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও পুলস্ত্য আচার্য। কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকের দায়িত্বে রয়েছেন তারা। অনশনকারীদের মধ্যে অনিকেত মাহাতো গতকাল শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে আর জি কর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বাকিরা এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

অনশনরত চিকিৎসকদের ১০ দফা দাবিগুলো হলো-

১. দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে আর জি কর হাসপাতালে চিকৎসক র্ধষণ ও হত্যার বিচার।

২. পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ।

৩. হাসপাতালগুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে রেফারেলের ব্যবস্থা।

৪. হাসপাতালে ফাঁকা বেডের হিসাব রাখতে ডিজিটাল মনিটরিং।

৫. কলেজভিত্তিক টাস্কফোর্স গঠন, প্যানিক বাটন ও হেল্পলাইন চালু।

৬. হাসপাতলগুলোর নিরাপত্তায় সিভিক ভলান্টিায়ারের বদলে পুলিশ ও নারী পুলিশ নিয়োগ।

৭. হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ।

৮. আন্দোলনরত চিকিৎসদের হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া।

৯. সব মেডিকেল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা।

১০. পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিল এবং পশ্চিমবঙ্গ হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগগুলোর তদন্ত।

এই ১০ দফা দাবিকে লিফলেট আকারে জনসাধারণের মধ্যে বিলি করার কাজ শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বুধবার দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর দিন এই লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে ৯ জন জুনিয়র চিকিৎসক গ্রেপ্তার হন। পরে তাদেরকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এদিকে ধর্মতলার অনশনমঞ্চের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে এই আন্দোলন। শুক্রবার দুপুর থেকে আরজি কর আন্দোলন ধর্মতলা চত্বরে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এদিকে অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে শুক্রবার জুনিয়র চিকিৎসকদের চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শুক্রবার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবির তালিকায় থাকা বিভিন্ন কাজের অগ্রগতির খতিয়ান দেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ প্রসঙ্গে এখনও কিছু জানায়নি রাজ্য সরকার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়