শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ০০:২৯

বর্ষায় ফুসফুসের সুরক্ষা

বর্ষায় ফুসফুসের সুরক্ষা
অনলাইন ডেস্ক

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহের পর প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। বৃষ্টির ছোঁয়ায় শুষ্ক, রুক্ষ প্রকৃতি হয়ে উঠছে সবুজ। বর্ষার কদম ফুল আমাদের মনকে করে উদ্বেলিত, হৃদয়কে করে প্রস্ফুটিত।

তবে বর্ষাকাল যেমন আমাদের মন চাঙ্গা করে, তেমনি চারপাশে তৈরি করে গুমোট ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। বিশেষ করে যেসব এলাকা অধিক ঘনবসতিপূর্ণ, যেমন– শিল্পকারখানা, বাজার, হোস্টেল, এমনকি বাসাবাড়িও বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে হতে পারে। এমন পরিবেশে সহজেই বেড়ে ওঠে ছত্রাকসহ বিভিন্ন অণুজীব। এসব অণুজীব সহজেই বাতাসের সাহায্যে আমাদের ফুসফুসে ঢুকে আক্রান্ত করে ফেলতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের রোগ, যেমন– অ্যাজমা/হাঁপানি, সিওপিডি, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিয়েক্টেসিস ইত্যাদিতে আক্রান্ত; তাঁদের জন্য উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। নতুন করে প্রদাহ দেখা দেয় ফুসফুসে। যে কারণে কাশি, শ্লেষ্মা, শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। অনেক সময় ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। অবস্থা বেশি সংকটাপন্ন হলে প্রয়োজন হয় হাসপাতালে ভর্তির।

ফুসফুসের স্বাস্থ্য ও রোগ নিয়ে আমাদের মাঝে আগে থেকেই কিছু ভুল ধারণা আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগ শুধু শীতকালেই হয়। আরেকটি হচ্ছে ফুসফুস যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, সে সম্পর্কে খুব কম ধারণা রাখা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ফুসফুসকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলে অন্য অঙ্গগুলো ফেইলিউর হলেও রিভার্স করানো কিংবা বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু একবার যদি ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সব অঙ্গ ভালো থেকেও ফুসফুসকে রক্ষা করতে পারে না।

তাহলে বর্ষাকালে কেমন হবে আমাদের ফুসফুসের যত্ন? সহজভাবে বললে আমরা যদি বাইরের পরিবেশ ভালো রাখি, তাহলে অতি সহজেই ফুসফুস ভালো রাখতে পারি।

এ জন্য যা করা যেতে পারে–

১. বাসার পরিবেশ শুষ্ক ও আর্দ্রতা ঠিক রাখা। দরজা-জানালা যতটা সম্ভব খুলে রাখতে হবে, বাসার ভেতর-বাইরে যথেষ্ট বায়ু প্রবাহিত হতে হবে।

২. ভেজা জামাকাপড় রুমের ভেতর না শুকিয়ে বাসার ছাদ বা বাইরে শুকানোর ব্যবস্থা করা।

৩. বালিশের কভার, বিছানার চাদর, রুমের আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।

৪. বিভিন্ন অ্যালার্জেন, রেণু/পোলেন, পশুপাখি, কেরোসিন তেল ইত্যাদি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা।

৫. সকালে যেহেতু শ্বাসনালি শুষ্ক থাকে, এ কারণে পরিমাণমতো পানি পান করা।

৬. নিয়মিত ব্রিদিং পরিচর্যা করা। বাইরে যেতে হলে মাস্ক ব্যবহার করা।

৭. একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা।

লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়