প্রকাশ : ২২ মে ২০২৩, ০৭:৩২
পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে দু-তিনদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত: কৃষিমন্ত্রী
দাম কিছুটা কমতির দিকে থাকায় আরও দুই-তিনদিন বাজার পরিস্থিতি দেখে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
রোববার (২১ মে) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সবার মধ্যে অস্থিরতা ও আতঙ্ক আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ অস্থিরতা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ বিষয়ে সরকারের বড় দায়িত্ব রয়েছে। কিছুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম নিয়ে অস্থিরতা যাচ্ছে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে, আবার কিছুটা কমে যায়, আবার বাড়ে। দু-তিনদিনের ব্যবধানে বাজার ওঠানামা করে। এটা কেন হবে, সবকিছুর ধারাবাহিকতা থাকে। গত ৪-৫ দিন আমরা আরও কাছ থেকে বাজার বোঝার চেষ্টা করেছি। পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা এটা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়, আমরা এটা মেনে নেই না।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যম আয়ের, সীমিত আয়ের সব মানুষেরই কষ্ট হচ্ছে। ৮০ টাকা কেজি তো পেঁয়াজ হতে পারে না। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে... আমরা শেষ পর্যন্ত চাষির স্বার্থটা দেখতে চাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা উচ্চ পর্যায়ে, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করেছি। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ইনশাআল্লাহ দু-তিনদিনের মধ্যে আপনারা সিদ্ধান্ত পাবেন- যে আমরা বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবো কি না।’
‘গতকাল পেঁয়াজের দাম মণে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে। যেহেতু কমার লক্ষণ আমরা আরও দু-একদিন দেখবো।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাঠ থেকে তথ্য পাচ্ছি যথেষ্ট পেঁয়াজ আছে। তাহলে দাম কেন কমছে না, এটা তো হওয়ার কথা নয়। দাম যদি সহনীয় অবস্থায় রাখা না যায় তাহলে আমাদের আমদানিতে যেতে হবে। তবে দাম কোনোক্রমেই ৮০ টাকা থাকবে না। আমরা চেষ্টা করছি, এ সিন্ডিকেট বা যারা এটা নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা যায় কি না।’
ভারতে পেঁয়াজের দাম কম জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সেখান (ভারত) থেকে আমদানি করে আমাদের বাজারকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে।’
‘গত বছর আমাদের পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছিল, মজুতও ভালো ছিল। অনেক পেঁয়াজ পচে গিয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে, তাই উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে।’
গত বছরের চেয়ে এবার ২ লাখ টনের মতো পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
পেঁয়াজের দাম কত হওয়া উচিত বলে মনে করেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দামটা ৪৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। আমদানি করলে দাম আরও কমে যাবে। ভারতে এত পেঁয়াজ হয়েছে। ওদের উচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের বারবার অনুরোধ করছে। চাষিরা আন্দোলন করছে, বাংলাদেশ পেঁয়াজ নেয় না। পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।’
কারসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভেতরে ভেতরে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
দাম ঊর্ধ্বমুখী হলেও আলু নিয়ে সমস্যা হবে না বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
এর আগে শুক্রবার রংপুরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, দাম না কমলে দু-একদিনের মধ্যে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আমরা লক্ষ্য রাখছি। আপাতত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। যদি দু-একদিনের মধ্যে দাম না কমে তাহলে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।
চিনির দাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চিনির দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তার প্রভাব এখনো পড়েনি। সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার কাজ করছে। আশা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কাঁচাবাজারের সবকিছু আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি খুব যে খারাপ তা কিন্তু নয়। দুটোতেই একটুখানি ঝামেলা হয়েছে। গতানুগতিকভাবে গ্লোবাল মার্কেটে দাম বেড়েছে, যেমন ডালের দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের দাম কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে।