প্রকাশ : ১৩ মে ২০২২, ০৮:৫৪
নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার হার কমেছে। এসব দেশে ২০২২ সালে ৪ দশমিক ২ শতাংশ রেমিট্যান্স বেড়ে ৬৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করছে বিশ্বব্যাংক। অথচ এসব দেশে ২০২১ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহের হার কমে প্রায় অর্ধেক হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশেও চলতি বছর (২০২২ সাল) রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে ২ শতাংশ হবে। গত বছর (২০২১ সাল) যা ছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ। এসময় মহামারি থাকা সত্ত্বেও ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। তবে এখন করোনা সংকট না থাকলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সংকটে ফেলেছে বিশ্বকে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত সবশেষ ‘মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফে’ এসব তথ্য জানানো হয়।
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিট্যান্স ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছিল। যদিও ২০২০ সালের প্রথম দিকে মহামারি শুরু হওয়ার সময় দক্ষিণ এশিয়ার বিপুল সংখ্যক অভিবাসী নিজ দেশে ফিরে এসেছিলেন। তারপরও ২০২১ সালে এই অঞ্চলে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ভালো।
এসময় ভারতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির হার ছিল ৮ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ২০ শতাংশ। কিন্তু ২০২২ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমবে বলে মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক।
এদিকে উল্টো অবস্থা দেখা গেছে ইউক্রেনে। দেশটিতে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। যা ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ইউক্রেনে চলতি বছরে রেমিট্যান্স ২০ শতাংশের বেশি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে মধ্য এশিয়ার অনেক দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমবে, যার প্রধান উৎস রাশিয়া। খাবার, সার এবং তেলের দাম বাড়ায় এই দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকির সঙ্গে দারিদ্রতা বাড়তে পারে।
অপরদিকে ২০২১ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ সব থেকে শক্তিশালী ছিল লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দেশসমূহে। এ অঞ্চলে রেমিট্যান্স প্রবাহের হার ছিল ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
এরপর সাব-সাহারান আফ্রিকায় ১৪ দশমিক ১, ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় ৭ দশমিক ৮, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় ৭ দশমিক ৬ এবং দক্ষিণে এশিয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
চীন বাদে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রেমিট্যান্স কমেছে ৩ দশমিক শতাংশ। ২০১৫ সাল থেকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য বৈশ্বিক অর্থের সবচেয়ে বড় উৎস রেমিট্যান্স।
বিশ্ব ব্যাংকের গ্লোবাল ডিরেক্টর (সোশ্যাল প্রোটেকশন অ্যান্ড জবস) মিশাল রুটকোভস্কি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বড় আকারের মানবিক, অভিবাসন এবং উদ্বাস্তু সংকট সৃষ্টি করেছে। এটি ঝুঁকি তৈরি করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের কারণে এশিয়ার ইউক্রেনীয় পরিবারগুলো অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এদের রক্ষার জন্য সামাজিক সুরক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানো জরুরি। অন্যথায় দারিদ্র্যতার হুমকি থেকে মানুষকে রক্ষা করা হুমকি হয়ে যাবে।