প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ১৩:১০
অর্থনৈতিক অবস্থার ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করবে সরকার, নেতৃত্বে দেবপ্রিয়
দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরতে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেজন্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্বেতপত্রে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ, জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন ও স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ের প্রতিফলন থাকবে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’।
প্রেস উইং আরও জানায়, এই কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটিতে প্রয়োজনীয় সদস্যদের মনোনীত করবেন। এ কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে। প্রস্তাবিত শ্বেতপত্রে মোটাদাগে ছয়টি বিষয়ে আলোকপাত করার প্রস্তাব রেখেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সেগুলো হচ্ছে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বাহ্যিক ভারসাম্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের কোনো একটি ভবনে হবে কমিটির দপ্তর।
কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ। সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তর প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করবে।
শ্বেতপত্র প্রণয়নের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বিগত সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নজিরবিহীন নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত করতে এই সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অর্থনীতি পুনরায় সচল করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিরসনে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। এ ছাড়া নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি দূর, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানো, কর ও শুল্ক নীতির সংস্কার ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ইত্যাদি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র থাকা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরকার যে বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে, সেজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি মনে করি যে, দলিল হিসেবে থাকার জন্য আর্থিক অবস্থার ওপর একটা শ্বেতপত্র তৈরি হওয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন।’