প্রকাশ : ১১ মে ২০২৪, ০৮:৩৩
দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ১৫ শতাংশ
দেশে বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ। বাড়তি এই মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে একটি জরিপের তথ্য উল্লেখ করে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন এ কথা বলেন।
বইটির রচয়িতা বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান।
সভাপতির বক্তব্যে বিনায়ক সেন বলেন, ‘সম্প্রতি বিআইডিএসের পক্ষে দেশের সব জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একটি পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি হিসাব করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৫ শতাংশ।’
সাধারণত মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
তবে বিআইডিএস পৃথক পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি হিসাব করেছে। বিবিএসের সর্বশেষ হিসাবে, গত মার্চ মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯.৮১ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৬৭ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্য বলছে, মার্চ মাসে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯.৮৭ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৬৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৯.৪৪ ও ৯.৩৩ শতাংশ।
বিনায়ক সেন জানান, তাঁদের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে মাছের দাম। গত এক বছরে মাছের দাম ২০ শতাংশের ওপর বেড়েছে। এরপর রয়েছে ফার্মের মুরগির দাম। দেশের পোলট্রি খাদ্যের বড় অংশ আমদানিনির্ভর। গত দুই বছরে আমদানি করা এসব খাবারের দাম কয়েক গুণ বাড়ায় শেষ পর্যন্ত এটি মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
বিনায়ক সেন মনে করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুধু সুদহার বাড়ানো বা এ রকম পৃথক পদক্ষেপ নিলে হবে না। এর সঙ্গে শুল্ক কমানোসহ সমন্বিতভাবে বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলেন, পোলট্রি খাদ্যে শুল্ক কমানো প্রয়োজন। এটি কমানো হলে তা মাছ ও মুরগির মতো পণ্যের দাম কমাতে সহায়ক হবে। এতে মূল্যস্ফীতিও কমবে।
অনুষ্ঠানে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বাড়ছে, সুনির্দিষ্টভাবে প্রকল্প ধরে কেউ কথা বলেন না। এসব বিষয় নিয়ে অর্থনীতিবিদদের কথা বলতে হবে।’
পিআরআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংক খাতে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারে হাত দিতে হবে। ব্যাংকগুলো এত দিন যেভাবে চলেছে, সেভাবে চলতে দিলে আমরা ঋণখেলাপি কমার আশা করতে পারি না।’